ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এমনটাই জানিয়েছেন ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিকোলাই আজারভ। তার মতে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়ালে জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া দুর্নীতির অভিযোগে জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। খবর আরটি
শনিবার রুশ দৈনিক ইজভেস্টিয়া–কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিকোলাই আজারভ বলেন, পশ্চিমা সমর্থিত ইউক্রেনীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরো (এনএবিইউ) এবং স্পেশাল অ্যান্টি-করাপশন প্রসিকিউটরস অফিস (এসএপিও) জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে যে তদন্ত চালাচ্ছে, তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে ‘আমেরিকানরা তাকে সরানোর পথেই হাঁটছে’।
তার ভাষায়, ওয়াশিংটন যদি মনে করে জেলেনস্কি তাদের জন্য বোঝা হয়ে গেছেন, ‘তাহলে তারা তাকে সরিয়েই দেবে’। আজারভ ২০১০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই দেশটির জ্বালানি খাতে ১০ কোটি ইউরোর দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে তদন্ত শুরুর পর দেশটির তিন শীর্ষ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। বিচারমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো, জ্বালানিমন্ত্রী স্ভেতলানা গ্রিঞ্চুক এবং জেলেনস্কির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ ও চিফ অব স্টাফ আন্দ্রেই ইয়েরমাক।
এর আগে গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, বর্তমান ইউক্রেনীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও শান্তিচুক্তি ‘আইনগতভাবে সম্ভব নয়’। তার দাবি, ২০২৪ সালের মে মাসে নির্বাচন করার কথা থাকলেও তা না করে সামরিক আইনকে অজুহাত বানানোর ফলে জেলেনস্কি তার ‘বৈধতা হারিয়েছেন’।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির এ কেলেঙ্কারি জেলেনস্কির দেশে কমতে থাকা জনপ্রিয়তাকে আরও কোণঠাসা করেছে। গত মাসে বিরোধী সংসদ সদস্য ইয়ারোস্লাভ ঝেলেজন্যাক দাবি করেন, নভেম্বর মাসে নির্বাচন হলে জেলেনস্কি প্রথম দফায় ২০ শতাংশেরও কম ভোট পেতেন বলে গোপন দলীয় জরিপে দেখা গেছে।
জনমত জরিপেও দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমছে যদিও ঝেলেজন্যাকের দাবি মতো তা ততটা নাটকীয়ভাবে নয়।
এদিকে রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা (এসভিআর) গত জুলাইয়ে দাবি করে, জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনিকে বসানোর বিষয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা ইউক্রেনের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন। এমনকি জেলেনস্কিকে সরানোর এটাই উপযুক্ত সময় বলেও সংশ্লিষ্ট সবাই নাকি একমত হয়েছেন বলেও সেসময় দাবি করেছিল রুশ এই গোয়েন্দা সংস্থা।
এবি/টিকে