রেডিও প্রেরণ কৌশল উদ্ভাবনের ভিত্তি গড়েছিলেন বিজ্ঞানী হার্টজ

রেডিও হল তার ব্যতীত যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এতে তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য প্রেরণ বা গ্রহণ করা হয়। যদিও আমরা জানি যে, এ রেডিওর আবিষ্কারক ইতালীয় ইঞ্জিনিয়ার গুগনিমো মার্কনি। আসলে রেডিও আবিষ্কারের ইতিহাস আরও পুরনো।

তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের শুরু, তারপর রেডিওতরঙ্গ পৃথকীকরণ, এ সম্পর্কিত তত্ত্বীয় ধারণা প্রস্তুত করা, এটি পরীক্ষার মাধ্যমে দেখানো, তারপর সেরকম যন্ত্র তৈরি করা এবং যন্ত্রের কার্যপদ্ধতি প্রস্তুত করা পর্যন্ত পুরোটা নিয়ে তার ইতিহাস শেষ।

এই ইতিহাসে অনেক বিজ্ঞানীই জড়িত। প্রকৃতপক্ষে, ১৮৮৭ সালে রেডিও প্রেরণ কৌশল উদ্ভাবনের ভিত্তি গড়েছিলেন জার্মান পদার্থবিদ হেনরি রুডলফ হার্টজ।

হার্টজ তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব ও তরঙ্গের দৈর্ঘ্য নির্ণয়, প্রতিফলন, প্রতিসরণ আর সমাবর্তনের সূত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাণিজ্যিক রেড়িও আবিষ্কারের উদ্দেশ্য না থাকলেও হার্টজ তরঙ্গ প্রেরক এবং গ্রাহক যন্ত্র তৈরি করেছিলেন।

প্রেরক যন্ত্রের ভোল্টেজ সরবরাহকারী ট্রান্সফর্মারের কার্যপ্রণালীর উপর নির্ভর করে স্পন্দকের বর্তনীর ফাঁকের মধ্যে পর্যাবৃত্ত গতিতে স্ফুলিঙ্গ উৎপন্ন হয়। এই স্ফুলিঙ্গের ফলে সৃষ্টি হয় তরঙ্গ।

গ্রাহক বা ডিটেক্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল স্ফুলিঙ্গ-ফাঁকযুক্ত ছোট ছোট দন্ড। প্রেরক যন্ত্রে বিদ্যুৎ চালণা করলে উচ্চ কম্পাঙ্কবিশিষ্ট স্পন্দন পাওয়া যায়। স্পন্দনগুলি নিকটবর্তী স্থানে পরবর্তি ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রের অস্তিত্বের নিদর্শন হলো গ্রাহকযন্ত্রের ফাঁকের মধ্যে স্ফুলিঙ্গের আবির্ভাব। হার্টজ এই স্পন্দনশীল গ্রাহকের নাম দিয়েছিলেন অনুনাদক (Resonator)। তবে হার্টজ বেতার যোগাযোগ সম্ভাবনার কথা ভাবতে পারেনি।

এই সম্ভাবনা সর্বপ্রথম দেখিয়েছিলেন ১৮৯৫ খৃস্টাব্দে রাশিয়ার বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার স্টেপানোভিচ পোপভ। ১৮৯৫ সালের ১২ মার্চ-এ তিনি পৃথিবীর প্রথম রেডিওগ্রাম প্রেরণ করেন। একটি চাবিকে কম ও বেশি সময় চেপে ‘হাইনচিষ হার্টজ’ শব্দগুলিকে ২৫০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে টেলিগ্রাফ টেপে লিপিবদ্ধ করেছিলেন।

১৮৯৯ সাল থেকে বিজ্ঞানী মার্কনি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার উপযোগী রেড়িও যন্ত্র তৈরি শুরু করলেন। মার্কনির কৃতিত্ব ছিলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার উপযোগী বেতার যন্ত্রের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, সংগঠন পরিচালনা ও বাজারজাতকরণে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা Sep 15, 2025
এশিয়া কাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, সুপার ফোর নিশ্চিত কার? Sep 15, 2025
img
আলোচনা ভেস্তে দিতেই দোহায় হামলা : কাতারি আমির Sep 15, 2025
img
তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহী চীন, পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল Sep 15, 2025
img

কাতারে হামলা

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Sep 15, 2025
img
দেশবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন : জামায়াত সেক্রেটারি Sep 15, 2025
img
লেভেল ফোর কোচিং শেষ করলেন মঞ্জু Sep 15, 2025
img
ওমানকে হারিয়ে প্রথম জয় আমিরাতের Sep 15, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে খেলোয়াড় প্রতিনিধি চায় কোয়াব! Sep 15, 2025
img
নয় ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা শেষে ইডির দপ্তর থেকে বের হলেন মিমি Sep 15, 2025
img
আমরা ১৭ বছর ক্ষমতায় নাই, তবুও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি: শামা ওবায়েদ Sep 15, 2025