তিন দিনের সফরে ভারতে এসেছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। তার সঙ্গে আছেন আরও দুই তারকা রদ্রিগো ডি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সফরের প্রথম দিনে কলকাতার সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে তাদের থাকার কথা ছিল ৪৫ মিনিট কিন্তু মাত্র ২০ মিনিট পরই তাদের মাঠ ছাড়তে হয়।
নেতামন্ত্রীদের ‘আদেখলেপনা’ আর আয়োজকদের চরম অব্যবস্থাপনায় মেসিদের 'ঠিকমতো' দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেডিয়ামে ভাঙচুর চালায় ফুটবলভক্তরা।
কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অফিসিয়ালদের আচরণ এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে শুরু করেন মেসি-ডি পলরা। মেসিরা ব্যক্তিগত বিমানে কলকাতা ত্যাগ করার পর বিমানবন্দর থেকে এই ইভেন্টের আয়োজক শতদ্রু দত্তকে গ্রেফতার করা হয়।
দর্শকের চেয়ার-ফেন্সিং ভাঙচুর, আগুন লাগানোর চেষ্টা আর এতো হাঙ্গামার মধ্যেও দর্শকদের নজর কেড়েছেন মেসির পাশে স্যান্ডো গেঞ্জি বা হোয়াইট ট্যাঙ্ক টপ পরে দাঁড়িয়ে থাকা ডি পল। নেটিজেনদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও এখন মেসির 'বডিগার্ড'।
শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও ফুটবল দুনিয়ার বিরল এক বন্ধুত্বের নিদর্শন মেসি-ডি পল। এলএমটেন যেখানে, ডি পল সেখানে। এ যেন হরিহর আত্মা, যা সময়ের সঙ্গে আরও গভীর হয়েছে। তাদের সম্পর্ক এতোটাই গভীরে পৌঁছে গেছে যে, আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে মেসির সঙ্গে ক্লাব-ফুটবল খেলতে মার্কিন মুলুকে চলে গেছেন। শুধু শুধুই তো আর তাকে মেসির 'বডিগার্ড' ডাকা হয় না!
তবে নেটিজেনদের ফোড়ন কাটা এই দুই তারকার বন্ধুত্ব নিয়ে নয়, তারা মজা করছেন স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ডি পলের স্টেডিয়াম বা পোডিয়ামে হাজির হওয়া নিয়ে। সেদিন যুবভারতী স্টেডিয়ামে স্যান্ডো গেঞ্জি পরে হাজির হয়েছিলেন এই মিডফিল্ডার। পরে হায়দরাবাদের উপল স্টেডিয়ামেও মেসির পাশে তাকে দেখা যায় হোয়াইট ট্যাঙ্ক টপ পরিহিত অবস্থায়। মেসির সঙ্গে তোলা অভিনেত্রী শুভশ্রীর ভাইরাল সেই ছবিতেও মায়ামি তারকাকে দেখা গেছে এই বেশে।
বিষয়টা নেটিজেনদের মধ্যে মুখরোচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একজন বেশ মজা করে মন্তব্য করেছেন– গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি, ডি পল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য নিজের শার্ট বিক্রি করে টিকিট ক্রয় করেছেন। ইন্সটাগ্রামে আরেকজন লিখেছেন– একটা মানুষ কতোটা অভাবে আছে একবার ভাবেন। স্যান্ডো গেঞ্জি পরে চলে আসছে.. একটা টিশার্ট কেনার টাকাও নাই, হায়! মেসি কি তাকে টাকাটুকা দেয় না? 'বডিগার্ড' হয়ে তাহলে লাভটা কী হইলো?!
কলকাতা বা হায়দরাবাদের স্টেডিয়ামে ডি পল স্যান্ডো গেঞ্জি পরে কেন এসেছিলেন? এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। এই মিডফিল্ডারও বিষয়টি নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা (মজা করে হলেও) দেননি। তবে স্যান্ডো গেঞ্জি পরার বিশেষ উদ্দেশ্য বা নির্দিষ্ট কোনো কারণ থাকতে পারে, যা বলতে পারবেন কেবল ডি পলই।
তবে আমরা কেবল অনুমানের পথ ধরে হাঁটতে পারি। আমরা প্রায়ই দেখি, জনসম্মুখে এলে তারকারা তাদের ব্যক্তিগত স্টাইল বা নিজের পছন্দমতো পোশাক পরিধান করে থাকে। কেউ কেউ আনকনভেনশনাল কিছু পোশাক পরে আসেন। কেউবা এমন পোশাক (স্ট্রিট ফ্যাশন) পরে দর্শকের সামনে হাজির হন, যার পেছনে বড় কোনো যুক্তি নেই। অনেকে শুধুমাত্র কমফোর্ট বা আরামটাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ সেখানকার আবহাওয়া বা তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে ক্যাজুয়াল পোশাক পরেন।
ডি পলের স্যান্ডো গেঞ্জি পরে স্টেডিয়ামে আসার বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা, আমরা জানি না। তবে এর আগেও তাকে এই পোশাকে অনেক জায়গায় দেখা গেছে।
এসএন