বিশ্বজুড়ে কাজের সময় বা ওয়ার্কিং আওয়ার এখন অনেক নমনীয় আর চাহিদাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের ২৪ ঘণ্টা শিফট থাকে, যার অর্থ কর্মচারীদেরকে মাঝে মাঝে রাত জেগেও কাজ করতে হয়।
তবে, এটি অনেকের কাছেই চ্যালেঞ্জিং, অনেকে রাতের শিফটে কাজ করতে পছন্দ করে। তারা মনে করে যে, এভাবে রাতগুলিকে আরও বেশি কাজে লাগানো যেতে পারে।
কিন্তু অনেকেই জানেন না, দিনের বেলা কর্মরত মানুষের চেয়ে রাতে কর্মরত মানুষের পরিশ্রমও হয় অনেক বেশি। ফলে নাইট শিফটে কর্মরত মানুষের ওপর নানা নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। এছাড়াও মানসিক ক্লান্তির সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ক্লান্তি বোধও হয়।
চলুন জেনে নিই, নাইট শিফটে কাজ করলে যেসব নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়-
ঘুমের সমস্যা
ঘুমের ব্যাধি আজকাল অতি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। তবে, আপনি যদি রাতের শিফটে কাজ করেন, ঘুমের ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাবে।
আমাদের দেহের প্রাকৃতিক ঘড়ি বা সার্কিয়ান ছন্দটি এমন যে, এটি দিনের বেলা কাজ করতে এবং রাতের বেলা বিশ্রাম নিতে অভ্যস্ত। যদি এমনটি না ঘটে তবে আপনার ক্যারিয়ারের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস
আপনি যখন রাত জেগে থাকেন, আপনার খাদ্যাভ্যাস স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তিত হয়। মধ্যরাতের স্ন্যাকিং বা ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার দেহের হজম প্রক্রিয়ার উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম এবং হজমজনিত বিভিন্ন অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
ওজন বৃদ্ধি
শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির বিরুদ্ধে জীবনযাপন এবং অসময়ে খাওয়ার অভ্যাস আপনার ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। আপনি যখন রাতের শিফটে কাজ চালিয়ে যাবেন, তখন ওজন হ্রাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং, ওজন বজায় রাখতে হলে রাতের শিফটে কাজ করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি
দেহের সুস্থতা বজায় রাখতে হলে প্রাকৃতিক ঘড়ি বা সার্কিয়ান ছন্দ বজায় রাখা উচিত। আপনি যখন প্রাকৃতিক ঘড়ির বিরুদ্ধে জীবনযাপন করবেন তখন স্বাস্থ্যের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যেমন, রাত জেগে কাজ করা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
সামাজিক জীবনের উপর প্রভাব
আপনি যখন সারারাত পরিশ্রম করেন এবং দিনের বেলা ঘুম উপভোগ করেন, তখন আপনার জীবনে সামাজিক দায়িত্ব পালন ও সম্পর্ক বজায় রাখার সময় থাকে না। এমনকি আপনার পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় ব্যয় করার মতো সুযোগ হয়ে উঠে না। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বলে যে, প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো এবং মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সূক্ষ্ম বিচ্ছিন্নতা দীর্ঘমেয়াদে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যেরও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
টাইমস/এনজে/জিএস