ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক আন্দোলন দিয়ে বাংলাদেশের ‘প্রকৃত স্বাধীনতা’ অর্জন সম্ভব নয়।
তাঁর ভাষ্য, শহীদ ওসমান হাদির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মাধ্যমেই এই স্বাধীনতা অর্জিত হবে। এ জন্য তিনি ‘বাম, শাহবাগি, ছায়ানট ও উদীচীকে তছনছ করে দেওয়ার’ আহ্বান জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে মোস্তাফিজ এই বক্তব্য দেন। রাত ১১টার দিকে বটতলা থেকে শুরু হওয়া ওই মিছিলে ছাত্রশিবির ছাড়াও জাকসুর নেতারা, ছাত্রশক্তি, ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সমাবেশে মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে তাঁরা ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ’ ও ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হাজারো শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হলেও সরকার এখনও ‘বিপ্লবীদের হত্যার চক্রান্ত করছে’।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ না হলে ভারতের সঙ্গে ‘কোনো সম্পর্ক রাখা যাবে না’। বাংলাদেশে চাকরি করা ভারতীয় নাগরিকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত পাঠানোর দাবিও তুলেন তিনি।
এদিকে ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনা শুরু হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন মোস্তাফিজ। তিনি লেখেন, শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়, ভারতীয় ‘আধিপত্যবাদী কালচারাল কাঠামো’র বিরুদ্ধে শহীদ ওসমান হাদির স্বপ্ন অনুযায়ী সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি স্পষ্ট করেন, তাঁর বক্তব্যে ব্যবহৃত ‘তছনছ’ শব্দটি ভাঙচুর বা সহিংসতার অর্থে ব্যবহার করা হয়নি; বরং ‘আধিপত্যবাদী বয়ানকে মোকাবিলা’ করার অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে। শব্দচয়নে ‘তাড়াহুড়ো’ হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। মোস্তাফিজ বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির নিয়মতান্ত্রিক পথেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায়।
পিএ/টিএ