কণ্ঠে গানই তাঁর প্রধান পরিচয়, সেই পরিচয়েই আজও স্বচ্ছন্দ জোজো মুখোপাধ্যায়। জন্মদিনের দিনে নিজের জীবন, পেশা এবং বিশ্বাস নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন এই জনপ্রিয় শিল্পী। অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থেকেও কেন শেষ পর্যন্ত গানের পথেই থেমে গেলেন, তার ব্যাখ্যাও দিলেন স্পষ্ট ভাষায়।
জোজোর জন্মদিন মানেই কর্মব্যস্ত দিন। মঞ্চানুষ্ঠান, শুভেচ্ছা আর উপহারে ভরে ওঠে সময়সূচি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনতলা বিশাল কেক উপহার পেয়েছেন, যা বাড়ির ন’তলায় তোলাই যায়নি। তাই সিদ্ধান্ত, মঞ্চেই কাটবেন কেক। পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শিল্পীজীবনের ঘনিষ্ঠরাও এই দিনটিকে বিশেষ করে তোলেন।
কথায় কথায় শৈশবে ফিরে যান জোজো। খুব অল্প বয়সেই বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলেও, ভালোবাসার অভাব হয়নি কখনও। মা পাড়াজুড়ে প্যান্ডেল করে জন্মদিন উদ্যাপন করতেন, বাবা আবার আলাদা করে যত্ন নিতেন। সেই স্মৃতির রেশ আজও রয়ে গেছে তাঁর জীবনে।
খ্যাতনামী অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায়ের কন্যা জোজো অভিনয়েও নিজের জায়গা তৈরি করেছিলেন। প্রভাত রায়, সন্দীপ রায়, অঞ্জন দত্তের ছবিতে কাজ করেছেন, ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন। তবু কেন সেই পথ ছেড়ে গানেই স্থির হলেন তিনি। জোজোর কথায়, একসঙ্গে একাধিক পেশায় নিজেকে উজাড় করে দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। গানের জগতে তখন তাঁর পরিচিতি বেশি, তার উপর প্রায় রোজই মঞ্চানুষ্ঠান। এতে অভিনয়জগতের তথাকথিত তারকাখ্যাতি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছিল। আর সব চেয়ে বড় কথা, তিনি নিজেই বিশ্বাস করেন, এক জন্মে একটি পরিচয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা যায়। তাই এই জন্মে গানই তাঁর একমাত্র পথ।
শিল্পীর মানবিক দিকও এ দিন উঠে এসেছে কথোপকথনে। নিজের সন্তানদের পাশাপাশি দত্তক সন্তান নিয়েছেন জোজো। তাঁর বিশ্বাস, অকারণে অর্থ ব্যয় করার চেয়ে অনাথ শিশুদের ঘর দেওয়া অনেক বেশি মূল্যবান। সামর্থ্য থাকলে আরও সন্তান দত্তক নিতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ভাবনাতেই ধরা পড়ে জোজোর জীবনদর্শন, যেখানে শিল্পীর পরিচয়ের বাইরে মানুষটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরপি/এসএন