রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ অবসানে শান্তি চুক্তি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের পথে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এক বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ বিষয়ে নিজেদের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে ভূখণ্ড সংক্রান্ত কিছু জটিল বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে।
রোববার (২৮শে ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো এস্টেটে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, মস্কো ও কিয়েভ শান্তি চুক্তির 'আগের চেয়ে অনেক কাছে' রয়েছে।
এর আগে ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, 'যুদ্ধ অবসানে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। বিষয়টি খুব কাছাকাছি রয়েছে।'
বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, গত সপ্তাহে উন্মোচিত ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার প্রায় '৯০ শতাংশ' বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির বিষয়টি '১০০ শতাংশ' সম্মত হয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, 'স্থায়ী শান্তির জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি একটি মূল মাইলফলক এবং আমাদের দলগুলো এর সব দিক নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে।'
তবে ইউক্রেনের ভূখণ্ড নিয়ে সংবেদনশীল ইস্যুতে এখনো পুরোপুরি সমাধান আসেনি। ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে, পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলের মর্যাদাসহ দু-একটি 'খুবই কঠিন' বিষয় এখনো ঝুলে আছে। ডনবাসের কিছু অংশে একটি 'মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল' তৈরির মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, যার অধীনে কিয়েভকে সেনা প্রত্যাহার করতে হতে পারে।
এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, 'আমরা একটি সমঝোতার কাছাকাছি, তবে এখনো চূড়ান্ত একমত হতে পারিনি।'
ভূখণ্ডের বিষয়ে জেলেনস্কি তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন। তিনি জানান, ভূখণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের জনগণকেই নিতে হবে এবং শান্তি পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরা হতে পারে।
বৈঠকের পর ট্রাম্প ও জেলেনস্কি যৌথভাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, বার্লিনে এর আগে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ইউক্রেন যদি ন্যাটোর মতো নিরাপত্তা গ্যারান্টি পায়, তবে তিনি ন্যাটোর সদস্যপদ না চাওয়ার বিষয়ে সম্মত হতে পারেন।
এদিকে, ইউক্রেনিয়ান প্রিজম থিংক ট্যাঙ্কের বিশ্লেষক অলেক্সান্ডার ক্রাইয়েভ আল জাজিরাকে জানান, অতীতের অভিজ্ঞতার কারণে ইউক্রেনের জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা নিয়ে কিছুটা সন্দিহান। তিনি বলেন, 'আমরা রাশিয়ার সাথে শান্তি চুক্তির বিষয়ে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারি না, তবে যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।'
এসকে/এসএন