টাকার নোট থেকে ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস!

মহামারীর ন্যায় নোভেল করোনাভাইরাস ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, আশার কথা হলো- এখনো বাংলাদেশে এ ভাইরাসে কেউ সংক্রামিত হয়নি। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো সাবধানতা। তাই জেনে রাখা ভালো যে, আমাদের প্রতিদিন ব্যবহার করা ব্যাংক নোট থেকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে ছোঁয়াচে এই ভাইরাসটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ব্যাংক নোট বা টাকার নোট থেকেও ছড়াতে পারে নোভেল করোনাভাইরাস। তাই সংস্থার পরামর্শ হলো নগদ লেনদেনের পরিবর্তে সম্ভব হলে এমন লেনদেন বেছে নিতে হবে, যাতে স্পর্শ এড়িয়ে চলা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সোমবার হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ব্যাংক নোটের গায়ে ছোঁয়াচে কোভিড-১৯ বেশ কয়েক দিন ধরে টিকে থাকতে পারে। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেন, ‌‘ভাইরাসটির সম্ভাব্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলে যেখানে সম্ভব সেখানে স্পর্শহীন লেনদেন ব্যবহার করা উচিৎ এবং নোট ধরার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নেয়া উচিৎ।

দ্যা ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে, ব্যাংক নোটের গায়ে ‘ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া’ পরিবাহিত হতে পারে। তাই স্পর্শহীন লেনদেনকে উৎসাহিত করছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইতিমধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চীন ও কোরিয়ার ব্যাংকগুলি ব্যবহৃত নোট আলাদা করে সেগুলি ভাইরাসমুক্ত করতে শুরু করেছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নোটগুলি ভাইরাসমুক্ত করতে অতিবেগুনি রশ্মি ও উচ্চ তাপমাত্রা ব্যবহার করা হচ্ছে এবং পুনরায় বাজারে ছাড়ার আগে ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হচ্ছে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডে চীন বা কোরিয়ার মতো নোট বিশুদ্ধিকরণের কোনো পরিকল্পনা এখনো নেই। তিনি আরও বলেন, ‘অন্য যে কোনো পদার্থের মতো নোটের গায়েও ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া পরিবাহিত হতে পারে। যাইহোক, পলিমার নোট স্পর্শ করার ক্ষেত্রে অন্য সাধারণ বস্তু যেমন দরজার হাতল বা ক্রেডিট কার্ড প্রভৃতি স্পর্শ করার মতো সমান ঝুঁকি রয়েছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সংক্রামিত বস্তু বা ব্যক্তির সংস্পর্শে কিংবা সংক্রামিত ভাইরাস কণার মাধ্যমে নোভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা জানি নোট সর্বদা হাত বদলাতে থাকে, এর মধ্য দিয়ে সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংস্পর্শে চলে আসে। তাই আমরা মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছি যে নোট স্পর্শ করার পর অবশ্যই ভালো করে হাত ধোঁয়ার চেষ্টা করুন এবং মুখমণ্ডল স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।’

তবে এটি এখনো নিশ্চিত নয় যে, প্রাণীদেহের বাইরে নতুন এই করোনাভাইরাস কয়দিন জীবিত থাকতে পারে। তবে সার্স ও মার্সের মতো মানুষকে সংক্রামিত করা পূর্বেকার করোনা ভাইরাসগুলি কোনো বস্তুর গায়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নয় দিনের মতো টিকে থাকতে পারতো।

যাইহোক, সাধারণ জীবাণু মুক্তকরণ প্রক্রিয়ায় পূর্ববর্তী ভাইরাসগুলি নিষ্ক্রিয় করা যেত এবং উচ্চ তাপমাত্রায় ভাইরাসগুলি ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু এটি এখনো নিশ্চিত নয় যে, নতুন করোনাভাইরাসটি এসব ক্ষেত্রে কিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে। তথ্যসূত্র: ইয়াহু ফিন্যান্স

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: