জেনে নিন, কোন মশলাগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আধার

মানবদেহের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো- অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি ‌‘ফ্রি-র‌্যাডিকেল স্কাইভেঞ্জার’ নামেও পরিচিত, যা ক্ষতিকারক ফ্রি-র‌্যাডিকেলগুলি থেকে কোষের ক্ষতি রোধ করতে সেলুলার স্তরে কাজ করে। মানবদেহে উৎপন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিকে অ্যান্ডোজেনাস অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস বলা হয় এবং খাদ্য বা পরিপূরক থেকে প্রাপ্তগুলি অ্যাক্সোজেনাস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। দূষণ, ইউভি রশ্মি, সিগারেটের ধোঁয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের দেহে ফ্রি-র‌্যাডিকেল তৈরি করা হয়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আমাদেরকে ফ্রি-র‌্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

আমরা অনেকেই জানি না যে, আমাদের রান্নাঘর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির সেরা সংরক্ষণাগার। আসুন জেনে নিই রান্নাঘরের কোন উপাদানগুলি আমাদেরকে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করতে সক্ষম-

হলুদ
হলুদের মধ্যে একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কারক্যুমিন নামে পরিচিত। এতে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে।

তবে, হলুদের সর্বাধিক উপকারিতা পাওয়ার জন্য মরিচের সঙ্গে এর মিশ্রণ ঘটাতে হবে। কারণ, মরিচে বিদ্যমান পাইপারিন কারক্যুমিনের শোষণকে ২০০% বাড়িয়ে তুলতে পারে। হলুদ সেবনের সর্বোত্তম উপায় হলো- একগ্লাস উষ্ণ দুধের সঙ্গে গোলমরিচ ও হলুদ মিশিয়ে পান করা।

দারুচিনি
এই মনোরম সুগন্ধযুক্ত মশলাটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। বিশেষত এতে সিনামালডিহাইড নামে একটি যৌগ বিদ্যমান। এটি শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে এবং কোষের ক্ষতির সমাধান করতে পারে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে অত্যন্ত কার্যকর এবং মানবদেহের হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে পারে। তাছাড়া, এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে। দারুচিনি খাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো- এটিকে স্যুপ বা স্ট্যুতে যুক্ত করা যায় আবার তরকারির উপরেও ছিটিয়ে দেয়া হয়। চাইলে পানিতে সিদ্ধ করেও দারুচিনি পান করা যায়।

রসুন
রসুনে অ্যালিসিন নামক এক প্রকার যৌগের উপস্থিতি রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মাংসপেশির ব্যথার উপশম করতে সক্ষম। হালকা ঠাণ্ডা মোকাবেলা করতে এটি কার্যকর এবং এটি স্বাস্থ্যকর হজমেও সহায়তা করে। রসুনের সঙ্গে লবঙ্গ পিষে সকালে খালি পেটে খেতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যায়।


লবঙ্গ
মশলাটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ‘ইউজেনল’ নামে পরিচিত। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ভিটামিন-ই এর চেয়ে পাঁচগুণ বেশি কার্যকর। এছাড়াও লবঙ্গতে ভিটামিন-সি রয়েছে, যা আরেকটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লবঙ্গ ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে। চা পানের সময় ১-২টি লবঙ্গ যোগ করতে পারেন আবার দিনের যেকোনো সময় একবার লবঙ্গ জল পান করতে পারেন। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: