জেনে নিন, পাঁচটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে

ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করতে সর্বাধিক ব্যবহৃত ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিক। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন দেহের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলি ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয় তখন এই ওষুধটি খুব কাজে লাগে।

আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে। অনেকেই ভাবেন, যে কোনো অসুস্থতার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর। যদিও এটি একটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ড্রাগ, তবুও প্রায়শই কাশি ও সর্দির মতো ভাইরাসজনিত অসুস্থতায় এটি অনেকে ব্যবহার করেন।

অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে বিভিন্ন ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং ব্যাকটেরিয়াকে অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীল করে তোলে। অনেকেই জানেন না যে বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিক প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রক্রিয়াজাত হয়।

চলুন পাঁচটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে জেনে নিই, যা আপনাকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

রসুন
রসুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে একে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কার্যকর ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। রসুনে বিদ্যমান অ্যালিসিন যৌগটি সালমনেলা, এসেরিচিয়া কোলিসহ বেশ কয়েকটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে অত্যন্ত কার্যকর।

রসুন খাওয়া একেবারেই নিরাপদ, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। সুতরাং, দিনে দু’টির বেশি রসুনের কোয়া খাবেন না। যে কেউ চাইলে জলপাই তেলে রসুনের কোয়া ভিজিয়ে রাখতে পারেন এবং তারপর মাঝে মধ্যে সেখান থেকে এক-দু’টি করে রসুনের কোয়া খেতে পারেন। তবে যারা রক্ত পাতলা করে এমন ওষুধ গ্রহণ করছেন, রসুন খাওয়ার আগে তাদের উচিৎ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা।

মধু
প্রাচীনকাল হতে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো মধু। এমনকি এটি মিশরীয় সভ্যতাতেও প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক ও ত্বকের সুরক্ষক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মধু দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত, পোড়া, আলসার ও ত্বকের সমস্যার চিকিৎসা করতে সহায়তা করে। ২০১১ সালের একটি সমীক্ষায় জানা গেছে যে, মধু প্রায় ৬০ প্রকারের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। মধুতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড থাকে, যা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন।

আদা
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্য আদা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। রান্নাঘরে সহজলভ্য এই ভেষজটিতে জিনজারোল, টের্পোনয়েডস, শোগল, জেরুমোন ও জিঞ্জারের পাশাপাশি ফ্ল্যাভোনয়েডস রয়েছে, যা একে চমৎকার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য দান করেছে। অসংখ্য গবেষণা থেকে জানা যায়, আদা ব্যাকটেরিয়ার বিভিন্ন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

হলুদ
হলুদে কারকিউমিন রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটি তার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। রান্নাঘরে বহুল ব্যবহৃত হলুদ আপনাকে ফ্রি-র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। এমনকি এটি রোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিও হ্রাস করতে পারে। হলুদ ছত্রাকের বৃদ্ধি হ্রাস করে এবং কোষে টিউমারের বৃদ্ধি দমন করে।

থাইম অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল
থাইম অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, প্রদাহ ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও থাইম অয়েলের কিছু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। তবে আপনি থাইম অয়েল শুধু বাহ্যিকভাবে (শরীরে) ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য অ্যাসেনশিয়াল ওয়েলের মতো এটি খাওয়া যায় না। এটি ত্বকে লাগানোর আগে অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন, সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করলে প্রদাহ ও জ্বালা হতে পারে। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: