হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাদাম

হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাদাম অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য। এতে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। এটি হৃদরোগ ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। কারণ এটি লো-ডেনসিটি লিপ্রোপ্রোটিন (এলডিএল) কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। এলডিএল প্রধানত রক্তনালিতে আবরণ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। হৃদরোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রদাহের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও ভূমিকা রাখে বাদাম।

বাদাম প্রাণনাশক হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী রক্তজমাট বাঁধা থেকেও সুরক্ষা দেয়। এছাড়া বাদাম ধমনীর ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও সাহায্য করে। বাদাম, কাজু বাদাম, মটরশুঁটি বা এজাতীয় খাদ্যে উপকারী যেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে সেগুলো হল-

অসম্পৃক্ত ফ্যাট: বাদামে মনোস্যাচুরেটেড, পলিস্যাচুরেটেডসহ উপকারী ফ্যাট রয়েছে। এটা ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: সাধারণত বিভিন্ন ধরনের মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তবে বাদামেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এমন একটি উপকারী অ্যাসিড, যা হার্টের ঝুঁকিপূর্ণ উত্থান-পতন প্রতিরোধ করে এবং মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক থেকে সুরক্ষা দেয়।

ফাইবার বা আঁশ: প্রায় সব ধরনের বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। আঁশযুক্ত খাবার খেলে পেট ভরা ভরা লাগে বলে এটা কম খেতে সাহায্য করে। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে আঁশযুক্ত খাবার।

ভিটামিন-ই: ধমনীর গায়ে আস্তরণ তৈরি হলে ধমনীর পথ সরু হয়ে যায়। এটা বুকের ব্যাথা, করোনারি ডিসিস ও হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী। তবে ধমনীর গায়ে আস্তরণ তৈরিতে বাঁধা দেয় ভিটামিন-ই। আর ভিটামিন-ই এর অন্যতম একটি উৎস হলো বাদাম।

প্লান্ট স্টেরল: কিছু কিছু বাদামে প্লান্ট স্টেরল রয়েছে। এটি এমন একটি উপাদান, যা কোলেস্টেরল হ্রাস করে। স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য কৃত্রিম মাখন, কমলার জুসসহ কিছু কিছু পণ্যে প্লান্ট স্টেরল যোগ করা হয়। তবে বাদামে প্রাকৃতিকভাবেই প্লান্ট স্টেরল তৈরি হয়।

এল-আর্জিনাইন: এল-আর্জিনাইনের অন্যতম একটি উৎস হচ্ছে বাদাম। এটি এমন একটি পদার্থ, যা ধমনীর দেয়ালের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এটা ধমনীর দেয়ালকে নমনীয় রাখে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয়। ফলে ধমনীর ভেতর দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাদামের ৮০ ভাই ফ্যাট। তবে এর অধিকাংশ ফ্যাটই স্বাস্থ্যকর। তাছাড়া এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি। এজন্য প্রত্যকের পর্যাপ্ত পরিমাণ বাদাম খাওয়া প্রয়োজন। আদর্শভাবে মাংস, ডিম ও দুগ্ধজাত পণ্যে প্রাপ্ত সংপৃক্ত চর্বির বিকল্প হিসেবে বাদাম খাওয়া উচিত।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দৈনিক দেড় আউন্স করে সপ্তাহে প্রায় চার দিন অলবণাক্ত বাদাম খাওয়া উচিত। তবে তেলে ভাঁজা বাদাম না খেয়ে কাঁচা কিংবা শুকনা ভাঁজা বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

এক্ষেত্রে কী ধরণের বাদাম খাবেন তা গুরুত্বপূর্ন নয়। কারণ, প্রায় সব ধরনের বাদামই স্বাস্থ্যকর। একই সঙ্গে বাদামের তেলও স্বাস্থ্যকর। তবে এতে আঁশের পরিমাণ কম।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: