মঙ্গল জয়ের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল স্পেসএক্স

গত সপ্তাহে স্পেসএক্স তাদের মঙ্গল অভিযানের কথা মাথায় রেখে একটি প্রোটোটাইপ রকেট পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পর মহাকাশযানটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ ফুট উপর পর্যন্ত উঠে যায় এবং তারপর নিরাপদে ল্যান্ডিং প্যাডে ফিরে আসে।

“এসএন৫,” সংকেতে চিহ্নিত এই বিশাল ধাতব মহাকাশযানটি দেখতে মোটেও অন্য কোন সাধারণ রকেটের মতো নয়, বরং অনেকটা বিশালাকার কোন ইঞ্জিনযুক্ত সিলিন্ডারের মতো।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই পরীক্ষাটি এই দক্ষিণ টেক্সাসের স্পেসএক্সের সাইটে চালানো হয়েছে এবং এটি স্পেসএক্সকে মূলত বুঝতে সহায়তা করেছে কীভাবে চূড়ান্ত নির্ভুলতার সাথে একটি বৃহত্তর মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ এবং অবতরণ করতে হবে।

এটি গত বছর থেকে চালানো স্পেসএক্সের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে সর্বশেষ আয়োজন। প্রতিষ্ঠানটি স্টারশিপ নামে একটি বৃহত্তর স্পেসশিপ এবং রকেট সিস্টেম তৈরির প্রতিযোগিতা করছে, কর্ণধার এলান মাস্কের মতে, ‘ই স্টারশিপ ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে মানুষ পরিবহন করবে।’

গত বছরও স্পেসএক্স স্টারহোপার নামে একটি পূর্ববর্তী প্রোটোটাইপ ব্যবহার করে তিনটি সংক্ষিপ্ত হপ পরীক্ষা চালিয়েছিল। তবে সেই মহাকাশযানটিকে এক বছর আগে থেকেই অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি গত ১২ মাস ধরে আরও বৃহত্তর মহাকাশযান তৈরি করার উদ্দেশ্যে নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আসছে। তবে পূর্ববর্তী প্রোটাটাইপ সমূহের বেশিরভাগ প্রেসারাইজেশন পরীক্ষার সময় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

আগের স্টারশিপ প্রোটোটাইপ, এসএন-৪, আকারে স্টারহোপরের থেকে দ্বিগুণ লম্বা ছিল, এটি প্রেসারাইজেশন পরীক্ষা পাশ করলেও গত মাসে রকেট ইঞ্জিন চালু করার সময় বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। একটি পরীক্ষামূলক অগ্নিকাণ্ডের সময় ধ্বংস হয়েছিল।

স্পেসএক্স কখন তার প্রথম স্টারশিপ মহাকাশযানটি পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠানোর চেষ্টা করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে সেটি হপ টেষ্টের চেয়ে আরও বিপদজ্জনক এবং কঠিন যাত্রা।

স্পেসএক্সের বর্তমান প্রোটোটাইপগুলি থেতে চূড়ান্ত স্টারশিপ ডিজাইন হতে এখনো অনেক পথ বাকী। পূর্বসূরিদের মতো এসএন৫ যানটিতে একটি মাত্র রকেট মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমান মকআপস অনুসারে, চূড়ান্ত মহাকাশযানের জন্য ছয়টি ইঞ্জিনের প্রয়োজন হবে। কক্ষপথে পৌঁছাতে বিশাল রকেট বুস্টার চূড়ায় স্টারশিপ মহাকাশযানটিকে উৎক্ষেপণ করতে হবে। এই রকেট বুস্টারটিকে ‘সুপার হেভি’ হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, এতে ৩০টিরও বেশি রকেট ইঞ্জিনের প্রয়োজন হবে।

স্টারশিপটি প্রায় ১০০ টন কার্গো- যেমন উপগ্রহ বা স্পেস টেলিস্কোপ প্রভৃতি পৃথিবীর কক্ষপথে বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। স্পেসএক্স দাবি করছে, কয়েক হাজার যাত্রীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে নিয়ে যাওয়ার জন্য যানবাহনগুলি পুনর্নির্মাণও করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, স্পেসএক্স ২০১৯ সালের শুরু থেকেই স্টারশিপ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করে চলেছে এবং সিইও এলান মাস্ক এই প্রজেক্টিকে অগ্রাধিকারের সাথে বিবেচনা করছেন বলে জানিয়েছেন। থ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে এত উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে : কাদের May 18, 2024
img
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল ঝড়ে সাতজনের প্রাণহানি May 18, 2024
img
রাঙামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মীসহ নিহত ২ May 18, 2024
img
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু May 18, 2024
img
ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, জনজীবনে স্বস্তি May 18, 2024
img
ওজন কমাতে চাইলে যে ৪ ফল খাবেন May 18, 2024
img
৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস, নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত May 18, 2024
img
গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদে লড়াই করতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা May 18, 2024
img
ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও একজনের, চলতি বছরে ৩৩ May 17, 2024
img
গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা : ওবায়দুল কাদের May 17, 2024