কে না চায় দীর্ঘদিন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে? বেঁচে থাকার সময়কালকে দির্ঘায়িত করতে বহুযুগ ধরেই মানুষ নানাবিধ গবেষণা করে আসছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহ এবং পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে আমাদের আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে সহায়তা করে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বা আশাবাদী হওয়া মানে নানা প্রতিকূলতা থেকে পালিয়ে যাওয়া নয়। বরং আশাবাদী লোকেরা প্রতিকূলতাকে সাময়িক ঘটনা কিংবা ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখে থাকেন। তারা বিশ্বাস করেন নিজের ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাদের আছে এবং ভবিষ্যতে ভাল কিছু পাওয়া সম্ভব। এই বিশ্বাস তাদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে সহায়তা করে।
গত সোমবার প্রকাশিত একটি গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যাচ্ছে অতি আশাবাদী ব্যক্তিরা কম আশাবাদী লোকেদের থেকে তুলনামূলক ভাবে ১১-১৫ শতাংশ দীর্ঘায়ু লাভ করেন। এমনও দেখা গেছে সবথেকে বেশি আশাবাদী ব্যক্তি ৮৫ বছরের বেশি সময় ধরে জীবিত ছিলেন।
গবেষণায় সামাজিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিকতা, ধূমপানের অভ্যাস, খাদ্যাভ্যাস এবং অ্যালকোহল গ্রহণের মতো অভ্যাসগুলি বিবেচনা করেও এ বিষয়ে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। গবেষণাটি ‘প্রসেডিংস অব দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অব সাইন্স’ এ প্রকাশিত হয়।
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক ও বোস্টন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের সাইকিয়াট্রির সহকারী অধ্যাপক লিউয়িনা লি এ বিষয়ে বলেন, “আশাবাদী ব্যক্তিদের জীবনে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে এবং তা অর্জন করার মতো আত্মবিশ্বাস থাকে। এমনকি এসব লক্ষ্যের মধ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে দীর্ঘায়ু লাভ করাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।”
ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসনের সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক রিচার্ড ডেভিডসনের মতে, “আশাবাদ এমন একটি মানসিক মাত্রা যার স্বাস্থ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে আশাবাদ লালনের মাধ্যমে এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্ভব।”
গবেষণায় আরও জানা গেছে, মানুষের আশাবাদী হয়ে ওঠা তার জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে মাত্র ২৫ শতাংশ। সুতরাং যে কেউ চাইলেই তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নিজেকে আশাবাদী করে তুলতে পারেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।
টাইমস/এনজে