‘অনিকোফেজিয়া’। দাঁত দিয়ে নিজের নখ যিনি নিজ্যেই কাটেন, তিনি এই ‘অনিকোফেজিয়া’ রোগে আক্রান্ত। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, টিনএজ এবং প্রি-টিনএজ বয়সের প্রায় অর্ধেক শিশু কিশোরের মধ্যে এই অভ্যাসটি রয়েছে। তবে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিই এই অভ্যাসটি ত্যাগ করেন।
সাধারণত রাগ, ক্ষোভ, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও উত্তেজনা বশত মানুষ দাঁত দিয়ে নখ কাটে। সাধারণ ভাবে এটি নিরীহ অভ্যাস মনে হলেও এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেহে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস প্রবেশ করতে পারে এবং এটি কোভিড-১৯ এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই বাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে ডক্টর অব মেডিসিন পুরভি পারিখ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নখ কামড়ানো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যদিয়ে ভাইরাসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। শুধু ভাইরাস নয়, বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াও দেহে প্রবেশ করে।’
আমাদের নখের নিচে সাধারণত স্ট্যাফিলোকোকাস, স্ট্রেপ্টোকোকাস, কোরাইনিফর্ম প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা দাঁত দিয়ে নখ কাটার মধ্যদিয়ে অতি সহজে আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং আমাদের আক্রান্ত করার সুযোগ পায়।
এছাড়াও এর মধ্যদিয়ে কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডার্মেটোফাইট ফুঙ্গি বা দাঁদের জীবাণুও নখের ফাঁকে আটকে থাকতে পারে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের মতে, হাতের নখ তাই সব সময় ছোট রাখা উচিত এবং হাত পরিষ্কার রাখা কর্তব্য।
সংস্থাটির দেয়া তথ্য মতে, সাধারণ সর্দি জ্বরের সাথে সম্পর্কিত প্রায় ২০০ প্রজাতির ভাইরাস সব সময় আমাদের চারপাশে রয়েছে। যাতে আক্রান্ত হলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই আমাদের উচিত অপরিষ্কার হাত দিয়ে মুখমণ্ডল স্পর্শ না করা। বিশেষ করে মুখের ভেতর হাত ঢোকানো থেকে বিরত থাকা।
এছাড়াও ফ্লু’য়ের জন্য দায়ী ভাইরাস আমাদের চামড়ার ওপর আটকে থাকতে পারে। যা নখ কাটার মাধ্যমে আমাদের দেহে প্রবেশ করা সম্ভব। তাই সব সময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং অবশ্যই দাঁত দিয়ে নখ কাটা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
জানলে অবাক হবেন দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে বিশেষ করে আপনার সামনের দিকের দাঁত এবং মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যদিয়ে দাঁতে ফাটল বা চিড় এবং মাড়িতে সংক্রমণও দেখা দেয়া সম্ভব।
তথ্যসূত্র: দ্যা হেলদি
টাইমস/এনজে/এসএন