শীতকালে বাজারে নানা ধরণের শাক-সবজি পাওয়া যায়। মূলা আমাদের সবার পরিচিত তেমনি একটি শীতকালীন সবজি। সাধারণত এই গাছের মূল সালাদ কিংবা তরকারি করে খাওয়া যায়, আবার এর পাতা ও ফুল খাওয়া হয় শাক হিসেবে রান্না করে। কাঁচা মূলা অনেক সময় ঝাঁঝালো স্বাদযুক্ত হয়ে থাকে।
খেতে সুস্বাদু পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজিটি তার ঔষধি গুণাগুণের জন্য উপমহাদেশে সুপরিচিত।
মুলার পুষ্টিগুন ও কার্যকারিতা-
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
মূলাতে এমন বিশেষ কিছু রাসায়নিক যৌগ থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। মূলা খাওয়ার ফলে দেহের প্রাকৃতিক অ্যাডিপোনেক্টিন (একটি প্রোটিন হরমোন) উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। দেহে উচ্চ মাত্রায় এই হরমোনটির উপস্থিতি ইনসুলিন প্রতিরোধের হাত থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করে।
লিভার ভাল রাখে
মূলাতে এমন কিছু রাসায়নিক যৌগ থাকে যা লিভারকে ক্ষতিকারক পদার্থ নিষ্কাশনে ও দ্রুত ক্ষত থেকে নিরাময় করতে সহায়তা করে। এই যৌগগুলি কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করতেও সহায়তা করে।
হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভাল রাখে
মূলা ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়ামের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ সমৃদ্ধ সবজি। এই পুষ্টি উপাদানগুলি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক। মূলা প্রাকৃতিক নাইট্রেটের একটি ভাল উত্স, নাইট্রেট রক্ত প্রবাহকে উন্নত করে।
এতে ক্যান্সার বিরোধী উপাদান রয়েছে
মুলায় প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোসিনোলেটস সালফার যৌগ থাকে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এমন জেনেটিক মিউটেশন থেকে কোষগুলিকে রক্ষা করতে পারে এবং টিউমার কোষগুলির বৃদ্ধিও রোধ করে। সালফার যৌগ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থগুলি দূর করে এবং টিউমার বিকাশ রোধ করতে কার্যকর।
হজমে সহায়তা করে
মূলা ডায়েটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি হজম প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এমন ফাইবার বা খাদ্যআঁশ প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ করে। মূলার মতো উচ্চ ফাইবার যুক্ত ডায়েট অন্ত্রের মাধ্যমে বর্জ্য নিষ্কাশনে সহায়তা করার মধ্যদিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। এছাড়াও মূলা পিত্ত নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে, যকৃত এবং পিত্ত থলির স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করে
মুলাতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ছত্রাকের সংক্রমণ বন্ধ করতে সক্ষম। এতে বিদ্যমান অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রোটিন সাধারণ ছত্রাকের সংক্রমণ যুক্ত কোষকে ধ্বংস করে দেয়।
মূত্রথলির সমস্যা নিরময় করে
মুলার রস প্রদাহ হ্রাস করতে এবং মূত্রনালির জ্বলন প্রশমিত করতে ভাল কাজ করে। এটি আমাদের সিস্টেমে বাড়তি টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেয়, যার ফলে কিডনি এবং মূত্রনালিতে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হয়। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
টাইমস/এনজে/এসএন