কোভিড-১৯ থেকে সেরা ওঠা ব্যক্তির মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে

মহামারীর শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছিলেন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুস্থ হয়ে ওঠার পর নিউরোলোজিক্যাল ও মানসিক সমস্যায় ভুগতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাভাইরাসের পূর্ববর্তী রূপগুলি থেকে উপলব্ধ তথ্য বিশ্লেষণ করে এ ধারণা করা হলেও শীঘ্রই কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যেও অনুরূপ লক্ষণ শনাক্ত হতে থাকে।
এছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ থেকে ধারণা করা হয়েছিল রোগটির ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
২০২০ সালে নভেম্বরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত একটি গবেষণায় বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার ৩ মাস পর মেজাজ পরিবর্তন ও উদ্বেগ জনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন।
একই গবেষকদের করা অন্য আরেকটি সমীক্ষায় জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ২,৩৬,০০০ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার ৬ মাসের মধ্যে নানাবিধ মানসিক জটিলতার চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের নিউরোলোজিক্যাল ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রায় ৩৪ শতাংশ।
এদের মধ্যে ১৭% উদ্বেগ জনিত সমস্যায়, ১৪% মেজাজ পরিবর্তন জনিত সমস্যায়, ৭% আসক্তি জনিত সমস্যায়, ৫ শতাংশ নিদ্রাহীনতায় এবং বাকীরা অন্যান্য সমস্যায় ভুগেছেন।
গবেষণায় আরও জানা যাচ্ছে, কোভিড-১৯ রোগটি কতটা জটিল আকার ধারণ করেছিল তার সাথে মানসিক জটিলতার সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে যাদের দেহে এর তীব্রতা বেশি ছিল তাদের বিভিন্ন মানসিক জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার শতকরা হারও বেশি।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত অবস্থায় যেসব রোগী ডেলিরিয়ামে (মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধনের ফলে হঠাৎ করে হতবিহ্বল হয়ে যাওয়া) আক্রান্ত হয়েছিলেন পরবর্তীকালে তাদের মানসিক জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার হার প্রায় ৬৪ শতাংশ।
এবিষয়ে গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ড. ম্যাক্সিম টাকিত বলেন, “ঠিক কি কারণে এবং কিভাবে এটি হচ্ছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। দ্রুত গবেষণার মাধ্যমে এর কারণগুলি নির্ণয় করতে হবে, যাতে করে এটি রোধ করা যায় এবং এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।”

টাইমস/এনজে
তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে।
https://www.medicalnewstoday.com/articles/covid-19-1-in-3-diagnosed-with-brain-or-mental-health-condition

 

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেক্সিকোর কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় আর্জেন্টিনার Nov 15, 2025
img
কিউই তারকা পেসারকে কোচ বানাল শাহরুখের দল Nov 15, 2025
img
টাইব্রেকারে প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে ব্রাজিল Nov 15, 2025
img
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ৫৩ নেতাকর্মী যোগ দিলেন জামায়াতে Nov 15, 2025
img
‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া নারীর জামিন নামঞ্জুর Nov 15, 2025
img
গ্ল্যামার নিয়ে প্রথমদিকে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কোয়েল মল্লিক Nov 15, 2025
img
মেসি-মার্টিনেজের গোলে বছরের শেষটা দারুণ এক জয়ে রাঙালো আর্জেন্টিনা Nov 15, 2025
img
মায়ের ত্যাগ স্মরণ করে আবেগাপ্লুত বোমান ইরানি Nov 15, 2025
img
অভিনেত্রী কামিনী কৌশল আর নেই Nov 15, 2025
img
জামায়াতের শোডাউনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল কর্মীর Nov 14, 2025
img
বিয়ে ও মাতৃত্বের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন শেহনাজ গিল Nov 14, 2025
img
ঈদগাহ মাঠের ঘটনার মূল আসামি জরেজুল ইসলাম গ্রেপ্তার Nov 14, 2025
img
১০ লাখ টাকা পুরস্কার পাচ্ছে বাংলাদেশের পদকজয়ী আর্চাররা Nov 14, 2025
img

ডয়চে ভেলে

বাংলাদেশ সীমান্তে ভারত কেন শক্তি বৃদ্ধি করছে? Nov 14, 2025
img
সংবিধান অনুযায়ী এখন নির্বাচনের কোনো ভিত্তি নেই : গোলাম পরওয়ার Nov 14, 2025
img
মনোনয়ন ইস্যুতে এবার ধানক্ষেতে নবদম্পতির রিভিউ আবেদন Nov 14, 2025
img
এনসিপির আখতারের কী ফাঁস করার হুমকি দিচ্ছেন মাহমুদ? Nov 14, 2025
img
মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ মাদরাসা ছাত্রের Nov 14, 2025
img
চোট নিয়ে জাতীয় দল থেকে ছিটকে গেছেন এমবাপে Nov 14, 2025
img
শাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৭ ডিসেম্বর Nov 14, 2025