দেশের একটি সার্থক প্রতিষ্ঠান সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড বা সিআরপি)। বরিশাল এবং রংপুর বিভাগ ছাড়া বাকি ছয়টি বিভাগেই ইতোমধ্যে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পঙ্গু মানুষদের নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখাতে খুব শিগগির দেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলায় পর্যায়ক্রমে সিআরপির সেবা কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চায় কর্তৃপক্ষ।
১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডের নাগরিক ভ্যালেরি অ্যান টেইলরের হাত ধরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দুটি পরিত্যক্ত গুদাম ঘরে মাত্র চারজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিআরপি। এরপর রোগী বাড়তে থাকলে রাজধানীর ফার্মগেটে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কয়েক বছর কার্যক্রম চালানো হয়। পরে ১৯৮৯ সালে সাভারের চাপাইনে পাঁচ একর জমি কিনে সিআরপির স্থায়ী ঠিকানা গড়ে তোলা হয়। পক্ষাঘাতগ্রস্তদের জন্য বানানো হয় ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল। পঙ্গু মানুষদের পুনর্বাসনে অনন্য অবদানের কৃতজ্ঞতা হিসেবে ১৯৯৮ সালে ভ্যালেরি অ্যান টেইলরকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ২০০৪ সালে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।
দীর্ঘ ৪৪ বছরের পথ চলায় অনেক অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত। চিকিৎসার পাশাপাশি শিক্ষা ও পুনর্বাসনে কাজ করে যাচ্ছে তারা। অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশির ব্যথা, স্নায়ুরোগ, মেরুরজ্জু ও পক্ষাঘাতগ্রস্ততার সমস্যাসহ বার্ধক্য ও খেলাধুলার কারণে দেখা দেওয়া বিভিন্ন সমস্যায় সিআরপির থেরাপিস্টরা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। একই চিকিৎসা দেওয়া হয় রাজধানীর মিরপুরসহ দেশের অন্যান্য উপকেন্দ্রে। সারাদেশে বছরে গড়ে ৮০ হাজার রোগীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও শুরু থেকে ফিজিওথেরাপি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে সিআরপি। বর্তমানে বছরে প্রায় ৪০০ জনকে ডিপ্লোমাসহ বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে তারা। এর চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিকতাপূর্ণ সেবার কারণে দিন দিন সেবা প্রার্থীদের চাপও বেড়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটিতে।
টাইমস্ ইনভেস্টিগেশনের ক্যামেরায় দেখুন বিস্তারিত