মেসি নৈপুণ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

২০১৮ বিশ্বকাপে এই শেষ ষোলোর ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে অশ্রুসজল চোখে বিদায় নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। চারবছর পর কাতারে আরেক বিশ্বকাপে উড়ছেন লা পুলগা খ্যাত আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। শেষ ষোলোর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও জ্বলে উঠেছেন তিনি। মেসি-আলভারেজ নৈপুণ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

দোহার আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) শেষ ষোলর লিওনেল মেসি ও ইউলিয়ান আলভারেজের গোলে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান ইউলিয়ান আলভারেজ। ৭৬ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেজের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমায় অস্ট্রেলিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের মোকাবেলা করবে আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডেডলক ভাঙেন হাজারতম ম্যাচ খেলতে নামা আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্সিভ ফুটবলের কারণে তাদের রক্ষণভাগে তেমন প্রভাব রাখতে পারছিল না আলবিসেলেস্তেরা। তবে লিওনেল মেসির জন্য তো একটু যায়গাই যথেষ্ট। সুযোগটা পেয়েই কাজে লাগিয়ে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক পা এগিয়ে দেন তিনি।

৩৩ মিনিটে পাপু গোমেজকে ফাউল করা হলে বা প্রান্ত থেকে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির দারুণ ফ্রি-কিক ডিবক্সে বাঁধা পেলেও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডাররা। ডি বক্সের জটলায় বল পেয়ে দারুণ প্লেসিং শটে গোল করেন মেসি। এটি বিশ্বকাপে মেসির নবম গোল। এই গোলে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন ছিয়াশি বিশ্বকাপের নায়ক ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে। আর এক গোল পেলেই ছুঁয়ে ফেলবেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল করা আর্জেন্টাইন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে এই প্রথম গোল পেলেন মেসি।
প্রথমার্ধে ১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

৫৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। এবার নায়ক আগের ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় গোল করা ইউলিয়ান আলভারেজ। অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান বল দিয়েছিলেন তার বাঁয়ে থাকা ডিফেন্ডারকে। কিন্তু আর্জেন্টাইনদের প্রেসিংয়ে তিনি ব্যাকপাস দেন রায়ানকে। এ সময়ে বলের পেছনে ধাওয়া করছিলেন আলভারেজ। রায়ান বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তুলে দেন তার পায়ে। ফাঁকা পোস্টে গোল করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ২২ বছর বয়সী ম্যানসিটি তারকার। শেষ ছয় ম্যাচে এটি তার চতুর্থ গোল।
৬৫ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মারেন মেসি। ৭০ মিনিটে আলভারেজকে তুলে লাউতারো মার্টিনেজকে নামান কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি।
শেষ পনেরো মিনিটে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। বেশ কয়েকবার ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু কখনো লাউতারো মার্টিনেজ তো কখনো মেসি হাতছাড়া করেছেন সহজ সুযোগ। কমপক্ষে দুবার সহজ সুযোগ মিস করেন হাজারতম ম্যাচ খেলতে নামা মেসি।

ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে অতিরিক্ত সময়ে নিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। এমি মার্টিনেজ ও ভাগ্য বাঁধা হয়ে না দাঁড়ালে গোল পেয়েও যেত ২০০৬ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো শেষ ষোলোয় খেলা সকারুরা। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে গোল প্রায় শোধ করেই ফেলেছিল তারা।

আর্জেন্টিনার ডিবক্সে ফাঁকা জায়গা পেয়ে ঢুকে পড়েছিলেন বদলি হিসেবে নামা গারাং কোল। ডিফেন্ডারদের হারিয়ে গোলরক্ষক এমি মারটিনেজের পায়ের ফাঁকা জায়গায় শট নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে অল্পের জন্য ফাঁকি দিতে পারেননি তাকে।

Share this news on: