ডেঙ্গুতে ৩০ দিনে প্রাণ গেছে ৩৯৬ জনের

ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছেই না। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ও মৃতের সংখ্যা। ইতোমধ্যে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত ৩০ দিনেই ডেঙ্গুতে ৩৯৬ জনের মৃত্যু এবং ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ছয়জন। ফেব্রুয়ারীতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মৃত্যু তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও ১১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এপ্রিলে দুইজনের মৃত্যু এবং ১৪৩ আক্রান্ত হয়েছেন। মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন আক্রান্ত এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

এই চারমাসে ডেঙ্গুতে ১৩ জনের মৃত্যু এবং দুই হাজার ২২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু জুন মাস থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমান্বয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু এবং ৫ হাজার ৯৫৬ জন আক্রান্ত হন।

এ ছাড়া জুলাইয়ে ২০৪ জনের মৃত্যু এবং ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আগস্টে ৩৪২ জনের মৃত্যু এবং ৭১ হাজার ৯৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সেপ্টেম্বরে ৩৯৬ জনের মৃত্যু এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৪০৬ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৮ জন। মারা গেছেন ৯৮৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটির ৬৩৯ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরের ৩৫০ জন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানা উদ্যোগ নিলেও কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ২৮১ জন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে: আইন উপদেষ্টা Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডের ঘটনায় কিছু দল বিএনপির নামে রংচং দেওয়ার চেষ্টা করছে: রিজভী Jul 12, 2025
img
বাবর আজমকে উইকেটকিপার হওয়ার প্রস্তাব দেননি পাকিস্তানের কোচ Jul 12, 2025
img
পুরোনো রাজনীতিতে ফেরা অতটা সহজ হবে না : নাহিদ ইসলাম Jul 12, 2025
img
টাঙ্গাইলে সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল ক্যাম্প, ১৫০০ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান Jul 12, 2025
"পারলে এবার ভোট টাকা দিয়ে কিনে দেখান!" বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ Jul 12, 2025
img
আখাউড়া-কসবা সীমান্তে প্রায় ৫ কোটি টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ Jul 12, 2025
img
মব জাস্টিস হলেই অপরাধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা Jul 12, 2025
img
এবার অ্যাঞ্জেলেস মাতাবেন দেশি তারকারা Jul 12, 2025
img
ক্রিকেটে রানতাড়ায় অবিশ্বাস্য রেকর্ড, ১৪.২ ওভারেই পেরোল ২৪৪ Jul 12, 2025
img
অবসরে যাচ্ছেন দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলা মুর Jul 12, 2025
img
চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকানে ব্যবসা করা নিয়েই মিটফোর্ডের সামনের ঘটনা ঘটেছে: পুলিশ Jul 12, 2025
img
রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংশোধন জরুরি: আলী রীয়াজ Jul 12, 2025
img
গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনো মাঠে আছে : নাহিদ Jul 12, 2025
কেন যাত্রীর মা ফোন করেছিলেন কাঠমান্ডুগামী বিমানে Jul 12, 2025
সেনাবাহিনী দিয়ে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে ভাবছে সরকার; উপদেষ্টা ফারুক ই আজম Jul 12, 2025
'তুমি পাম দিতেছো সমস্যার কথা বলো'-পুলিশ সদস্যকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 12, 2025
img
রাজসাক্ষী হিসেবে সহায়তার শর্তে চৌধুরী মামুনকে ক্ষমা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের Jul 12, 2025
img
কিউবার প্রেসিডেন্টের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Jul 12, 2025
img
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মিটফোর্ডে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ Jul 12, 2025