আ. লীগের সবাই নাকি পালিয়ে গিয়েছিল, তাহলে যুদ্ধটা করলো কে : প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়েছিলেন বলে বিএনপি এক নেতা যে মন্তব্য করেছেন তার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলে যুদ্ধটা করল কে?

আজ আজ বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বিএনপি নেতারা বলেন, ২৫ মার্চ নাকি আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে যুদ্ধটা করলো কে? বিজয় কে আনল? মুজিবনগর সরকার গঠন করে শপথ নিয়ে তারা যুদ্ধ পরিচালনা করলেন। সরকারপ্রধান ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তার গ্রেপ্তারের পর উপ-রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সেই সরকারের অধীনে এ দেশে যুদ্ধ হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা বলছেন, পালিয়ে গেল- তাহলে যুদ্ধটা করল কে? আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জিয়াউর রহমান তো বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেছেন। সামরিক অফিসার হিসেবে তিনি এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যে মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলেন, সেটা কে দিয়েছেন? আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। এটাও অকৃতজ্ঞরা ভুলে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ তো এককদম এগোতে পারেনি। আমি বলি, এককদম এগোতে দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে আমরা প্রতিবেশীসহ অনেক দেশের সহায়তা পেয়েছি। আবার পেয়েছি, অনেক বড় দেশের বৈরিতা। অবশ্য সে দেশের নাগরিকদের সমর্থনও পেয়েছি। যারা আমাদের স্বাধীনতায় সহায়তা করেছে, তাদের আমরা সম্মানিত করেছি, স্বীকৃতি দিয়েছি। একমাত্র বাংলাদেশই এটা করেছে। এতে বাংলাদেশও সম্মানিত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ বলছে, ‘গণতন্ত্র নেই। দেশের কোনো উন্নতিই হয়নি। স্বাধীনতার পরও এমন কিছু কার্যক্রম আমরা দেখেছি। জাতির পিতাকে সময় দেয়নি। স্বাধীন হওয়ার পরই শুরু হয়ে গেলো সমালোচনা। নতুন বিপ্লবসহ নানা ধরনের কথা। এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীরা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল- মানুষের মন থেকে জাতির পিতাকে মুছে ফেলা। সফল হয়নি। যার কারণে তাকে থামিয়ে দিতে হত্যার পথ বেছে নেয়।’

তিনি বলেন, ‘একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে বিজয় এনে দেওয়া জাতির পিতার মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ছিল বলে সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলা, সবই তিনি করেছেন। এ জাতির ভাগ্য পরিবর্তনে বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করেছি, এর ২৯ বছর ছিল জাতির দুর্ভাগ্যের। স্বাধীনতার পরপরই মাত্র তিন বছরে একটি স্বল্পোন্নোত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন শেখ মুজিব। আইন, নীতিমালাসহ সবকিছু করে দিয়ে যান। একটি সংবিধান আমাদের উপহার দিয়েছেন। এতে আমাদের প্রতিটি অধিকারের কথা বলা আছে।’

আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, দলের স্বাস্থ্য সম্পাদক ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি প্রমুখ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ Oct 09, 2025
img
না ফেরার দেশে আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলার ও বোকা জুনিয়র্সের কোচ Oct 09, 2025
img
ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার, আটক ৮ জেলে Oct 09, 2025
img
মৌসুমি বায়ুর প্রভাব কমায় কমছে বৃষ্টির প্রবণতা Oct 09, 2025
img
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে লালুর বক্তব্য ব্যক্তিগত: বিএনপি Oct 09, 2025
img
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আজ হংকংয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ Oct 09, 2025
img
জেনে নিন, দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ? Oct 09, 2025
img
আজ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেবেন আসিফ মাহমুদ Oct 09, 2025
img
বিমানবন্দরের তার চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের Oct 09, 2025
img
ইতিহাস গড়তে সৌদি ক্লাবের দায়িত্বে সাবেক পর্তুগিজ উইঙ্গার কন্সেইসাও Oct 09, 2025
img
খুব দ্রুত ভিসা জটিলতা দূর করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার Oct 09, 2025
img
রাজধানীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ Oct 09, 2025
img
বিশ্বকাপ বাছাই থেকে ছিটকে গেলেন ডিফেন্ডার ডিন হাউসেন Oct 09, 2025
খালেদা জিয়াকে দেখে নেতা বললেন - আজ ঈদের চেয়েও খুশি Oct 09, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Oct 09, 2025
‘আমি এক্সিট খুঁজছি না, বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটাব’ Oct 09, 2025
হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আসিফ মাহমুদের মাঝে শেখ হাসিনার প্রতিচ্ছবি Oct 09, 2025
ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ ডিজির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Oct 09, 2025
যেকারণে নির্বাচনের আগে গণভোটে অনড় অবস্থানে জামায়াত Oct 09, 2025
স্ত্রীর চিৎকারে নোবেল জয়ের সুখবর পেলেন ফ্রেড র‍্যামসডেল Oct 09, 2025