১৯ কারখানা বন্ধ, বাজারে ওষুধ সঙ্কটের আশঙ্কা

বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৮ দাবিতে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন করছেন ওষুধ উৎপাদনে জড়িত শ্রমিকরা। প্রায় দুই সপ্তাহের এ আন্দোলনে স্কয়ার, জেনারেল ফার্মা, ইনসেপ্টার দুটি কারখানাসহ ১৯টি ওষুধ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আরও কয়েকটি বন্ধ হওয়ার পথে। এতে দেশে ওষুধের সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে কারখানার নিরাপত্তা চেয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সমিতির সভাপতি আবদুল মুক্তাদির। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে দু‘-একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া ওষুধ কারখানার শ্রমিকদের অসন্তোষ ছিল না। তাদের খাওয়া-দাওয়া, বেতন-ভাতাসহ সবকিছুর ব্যাপারে আমরা সব সময় সচেতন। কখনোই তাদের অসন্তোষ দেখা যায়নি। কিন্তু, হঠাৎ করেই গত দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন দাবি জানাচ্ছেন তারা, যা পূরণ করা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। কারণ, বিগত চার বছরে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে মাঝারি ধরনের কোম্পানিগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। বড় যে ২৫ থেকে ৩০টি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রয়েছে, তাদের লাভের পরিমাণও একেবারে সীমিত।
ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি বলেন, স্টাফদের বন্দি করে রেখে তারা কাগজে স্বাক্ষর নিতে চাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একটি কোম্পানির স্টাফদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। ইনসেপ্টায় প্রায় ৪০০ স্টাফকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। দাবি জানাতে পারে, তাই বলে এভাবে জিম্মি করা তো ঠিক হতে পারে না। বিজ্ঞানী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এভাবে জিম্মি করে রাখবে এবং আমরা সহযোগিতা পাব না, এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের ও হতাশাজনক। আমরা ভাবতে পারছি না যে, কর্মীরা এমন আন্দোলন করতে পারে।

তিনি বলেন, এভাবে চললে মজুদ থাকা ওষুধ দিয়ে কিছুদিন হয়ত চলবে, কিন্তু এর পর সঙ্কট তৈরি হবে। এর পেছনে কারা আছে, আমরা সেটি জানি না। কিন্তু, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এটা বুঝতে পারছি। তাই, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আবদুল মুক্তাদির বলেন, অনেক কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে, অনেকে সমন্বয় করতে পারছে না। ইতোমধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপ্টার দুটি কারখানা, জেনারেল ফার্মাসহ ১৯টি ওষুধ তৈরির কারখানা বন্ধ রয়েছে। যেগুলো চলছে, কখনো বন্ধ থাকছে, কখনো চালু থাকছে। সহিংসতা হোক, এটা আমরা চাই না। ওষুধ শিল্প সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুরো দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং তা অপূরণীয়। কোনো ধরনের সহিংসতা ও জিম্মি দাবি আদায়ের ভাষা হতে পারে না। সরকারের মাধ্যমে একটা আলোচনা হতে পারে। আমরা নিরাপত্তা চাই।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের একটা দাবি পূরণ করলে নতুন করে আরও দাবি তোলা হচ্ছে। একটার পর একটা দাবি বাড়ছেই। তাদের এই দাবির বিষয়টা কোনোভাবেই আমরা থামাতে পারছি না। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হয়, এতদিন কোনো দাবি না জানালেও হঠাৎ করে কেন এমন? আবার পূরণ করলেও কেন মানছে না, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু, তারা কোনটি আগে করবেন, সেটি নিয়ে ভাবছেন। ওষুধ শিল্পকে আমরা অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই, ওনারা এখনই এগিয়ে আসুন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজ চুরি, কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা Nov 28, 2025
img
কানাডায় কপিল শর্মার ক্যাফে হামলার মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার Nov 28, 2025
img
ইউরোপে হামলা করবে না রাশিয়া- লিখিত নিশ্চয়তা দিতেও প্রস্তুত পুতিন Nov 28, 2025
img
শাহজাহান চৌধুরীর মন্তব্যে জামায়াতের নীলনকশা উন্মোচিত হয়েছে : আবুল হাশেম Nov 28, 2025
img
আগুন নিয়ে যারা খেলা করে তাদের পরিণতিও ভবিষ্যতে খারাপ হবে: শিবির সভাপতি Nov 28, 2025
img
নতুন করে শপথ নিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন জামায়াতে আমির Nov 28, 2025
img
কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর স্মরণসভায় অনুপস্থিত দুই মেয়ে Nov 28, 2025
img

মির্জা ফখরুল

বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন পাশ করছে সরকার Nov 28, 2025
img
বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সফরের সম্পূর্ণ অর্থ দান করল শ্রীলঙ্কা Nov 28, 2025
img
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির এক বিষয়ের সিলেবাস নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত এনসিটিবির Nov 28, 2025
img
এমপি হতে পারলে বাকি ২৯৯ এমপির ‘জান’ বের করে ফেলব : ওসমান হাদি Nov 28, 2025
img
২০ শতাংশ পরিবহন রেল-নৌপথে নেওয়ার পরামর্শ উপদেষ্টার Nov 28, 2025
img
ইমরান খানের মুক্তির দাবি ছেলে কাসিমের Nov 28, 2025
img
নির্বাচনে নারীদের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : জয়নাল আবেদিন Nov 28, 2025
অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল Nov 28, 2025
img
নারায়ণগঞ্জে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থী পরিবর্তনের রিভিউ আবেদন Nov 28, 2025
অবৈধ জেলেনেস্কি সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্ভব নয়: পুতিন Nov 28, 2025
img
বহিষ্কৃত ৯ নেতাকে বিএনপির সুখবর Nov 28, 2025
img
যদি সহায়ক পুলিশ লাগে, আমি শিবির-জামায়াতের লোক দেব: ওসিকে জামায়াতের প্রার্থী Nov 28, 2025
img
আওয়ামী দুঃশাসনে দেশে মেধাবী বেকারদের সংখ্যা বেড়েছিল : আবুল কালাম Nov 28, 2025