গুরুতর অসুস্থ গত ১৭ বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) বন্দি বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। শ্বাসকষ্ট, জটিল কিডনি সমস্যা, মেরুদণ্ডে ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তিনি।
এ অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) কারাগারে তাকে পর্যবেক্ষণ করতে যাবেন ৪জন চিকিৎসক।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিভিন্ন রোগে ভুগছেন লুৎফুজ্জামান বাবর। সেজন্য কারাগারের চিকিৎসক ও সিভিল সার্জনের পরামর্শক্রমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট রোগের চিকিৎসক পাঠানোর জন্য পত্র পাঠানো হয়েছিল। সে কারণে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ শনিবার (৯ নভেম্বর) চারজন চিকিৎসক কারাগারে পাঠাবে বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিবদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. শামীম আহমদের নেতৃত্বে গঠিত বোর্ডের অন্য চিকিৎসকরা হলেন- ডা. সৈয়দ ফজলুল ইসলাম, ডা. মো. জাহিদুর রহমান ও ডা. খালিদ মাহমুদ মোরশেদ। সার্বিক সমন্বয় করবেন শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. দেলোয়ার হোসেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কারারুদ্ধ থাকার ফলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দেওয়ায় নানা রোগে ভুগছেন লুৎফুজ্জামান বাবর। এর মধ্যে অন্যতম রোগগুলো হলো- ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা, গ্যাস্ট্রিওসোপাজিল রিফ্লাক্স ডিজিজেজ (জিইডি), ইরিটেবল বাউল সিনড্রোম (আইবিএস), হাইপারটেনশন (এইচপিটি), স্পন্ডিওলাইসিস, পলিপ, আর্থাইটিস ও অস্ট্রিওপ্রোসিস। তার কিডনিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। লুৎফুজ্জামান বাবর ২০০৭ সাল থেকে কারাগারে আছেন। এ ছাড়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও তিনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।