ডিএসসিসির টাকা নিয়ে ’তাপসের ব্যাংক’ এর দীর্ঘসূত্রিতা

শেখ হাসিনার শাসনামলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন শেখ ফজলে নূর তাপস। সে সময়ে সিটি করপোরেশনের বার্ষিক রাজস্বের প্রায় অর্ধেক অর্থ—অর্থাৎ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৫৪৩ কোটি টাকা—মধুমতি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখেছিলেন। এসব টাকার মধ্যে ১৪৫ কোটি টাকা ঠিকাদারদের জামানত হিসেবে এবং ১৭৮ কোটি টাকা বাজার সালামীসহ অন্যান্য খাতে স্থায়ী আমানত ছিল।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্থায়ী আমানত ফেরত দিতে মধুমতি ব্যাংক গড়িমসি করছে, এমন অভিযোগের পেছনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের। কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকের এমন গড়িমসির কারণে উন্নয়নকাজের ঠিকাদারদের জামানতের টাকা যথাসময়ে ফেরত দিতে পারছে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ।

এর আগে ১৪৪ কোটি টাকা চেয়ে মধুমতি ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। তবে টাকা দিতে কালক্ষেপণ করে ব্যাংকটি। পরে আরও কয়েকবার তাগাদা দিলে ৫ দফায় ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত দেয় তারা। এখনো ৮ কোটি টাকা দেওয়া বাকি।

তাপসের সময়ে এই অর্থ ব্যাংকে রাখার একটি প্রধান কারণ ছিল ঠিকাদারদের জামানতের টাকা এবং প্রকল্পের বিল যথাসময়ে পরিশোধ না করা। সিটি করপোরেশনের হিসাব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত স্থায়ী আমানত ও প্রকল্পের জমা অর্থ মিলিয়ে মধুমতি ব্যাংকে দক্ষিণ সিটির ৯৬৬ কোটি টাকা ছিল। মূলত উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে চালিয়ে ও ঠিকাদারদের জামানতের টাকা যথাসময়ে না দিয়ে এসব টাকা ব্যাংকটিতে জমা রাখা হতো। এ নিয়ে আগে ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পাননি।

এছাড়া, তাপসের মেয়াদকালে মধুমতি ব্যাংকটি এমনভাবে করপোরেশনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল যে, সিটি করপোরেশনের প্রায় সব লেনদেন এই ব্যাংকটির মাধ্যমে সম্পাদিত হত। এটি অনেকেই "তাপসের ব্যাংক" বলেও উল্লেখ করতেন, কারণ তাপস নিজেই ব্যাংকটির উদ্যোক্তা ছিলেন এবং তিনি এখনো এর পরিচালক।

টিএ/

Share this news on: