শিবির সন্দেহে এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করেছিলেন ১০/১২ জন ছাত্রলীগ কর্মী। ২০২২ সালের এই ঘটনার অভিযোগে ১০ শিক্ষার্থী আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন।
ঘটনাটি খুলনা প্রকৌশোল বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদের সাজা পেয়েছে আরও ৩ শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীরা সবাই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছিলেন বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে। ২৭ জানুয়ারি ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় তাদের এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ঘটনা সম্পর্কে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এবং শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১০–১২ জন নেতা–কর্মী জাহিদুর রহমানকে প্রথমে ড. এম এ রশিদ হলের ১১৫ নম্বর কক্ষে এবং পরবর্তী সময়ে হলের গেস্টরুমে নিয়ে দুই দফা নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাঁর নামে মামলাও করা হয়।
ছাত্রলীগ কর্মীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সভায় নেয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ। সভায় ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তবে বিষয়টি ৩ ফেব্রুয়ারি জানাজানি হয়।
এদিকে জাহিদুর রহমানসহ অন্য ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনে জড়িত ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত বছরের আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জাহিদুর রহমান তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন। জাহিদুর রহমান বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব।
ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি ওই সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কুয়েটের এস এ রশীদ হলে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে শারীরিক ও মানসিকভাকে নির্যাতন করেন কিছু শিক্ষার্থী। ঘটনা তদন্তের জন্য ২০২৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি তদন্তপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদনটি গত ২৭ জানুয়ারির ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালেচনা শেষে ছাত্রশৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
টিএ/