অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে জনগনের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে। সরকারের পক্ষ থেকেও আছে ব্যাপক সংস্কারের অঙ্গীকার। বিশেষ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের নিয়ে ছিল শত জল্পনা কল্পনা ও প্রত্যাশ্যা। কিন্তু ৬ মাসে সংস্কার-পরিবর্তন দূরে থাক বরং মন্ত্রনালয়ে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে অভিযোগ রয়েছে।
এমন অবস্থায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের ডিপ্লোমেসি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ফরেন পলিসির বড় অংশ জুড়ে থাকা বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন এবং কোথায় যাচ্ছে সে ব্যপারে নির্দেশনা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এমনকি বন্ধুপ্রতিম যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি মতামত অনেকের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছ’মাসে হেডকোয়ার্টার এবং মিশনগুলোতে পরিবর্তন আনতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থার সৃষ্টি করেছে তৌহিদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অনেককে ফেরত আনা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র সচিবের ন্যূনতম ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
একটি গণমাধ্যমে দাবি, কতিপয় ঘটনা দুর্ঘটনা নিয়ে সরব থাকার চেষ্টা ছাড়া ফরেন পলিসিতে সমন্বিত কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা নেই মন্ত্রনালয়ের। অভ্যন্তরীণ বদলি-পদোন্নতি নিয়ে পেশাদারদের মাঝে অন্তহীন ক্ষোভ বিরাজমান। অভিযোগ উঠছে রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, মিশন প্রধান কিংবা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নে পতিত সরকারের পদাঙ্কই অনুসরণ করছে বর্তমান সরকার। ফলে হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগীরাই ঘুরে ফিরে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাচ্ছেন কিংবা বহাল রয়েছেন।
অভ্যুত্থানে যুক্ত ছাত্র-জনতাকে ‘সন্ত্রাসী’ এবং ‘জঙ্গি’ বলে দুনিয়াতে প্রচার করা কূটনীতিকদের বিচারের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি ছিল সরকারের। কিন্তু, ৬ মাসে সে প্রসঙ্গে তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ করা বরং ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনা সরকারকে রক্ষায় পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে ‘অ্যাক্টিভিস্ট’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে পুরস্কৃত করেছেন উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, এমন অভিযোগও উঠেছে গণমাধ্যমে।
উপদেষ্টার ৬ মাসে ৬টি সফর করেছেন। যার ৫টিই বহুপক্ষীয় কর্মসূচি উপলক্ষে। নিউ ইয়র্কের পর ক্যামেরুন, সামওয়া, কুয়েত, পর্তুগাল সফর করেন তিনি। অবশ্য গত ২০ থেকে ২৪শে জানুয়ারি ছিল তার চীনে দ্বিপক্ষীয় সফর। সেই সফরে চিকিৎসার জন্য ভারতের বিকল্প হিসেবে চীনকে গড়ে তোলার প্রস্তাব নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে।