ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালেও সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকায় তারা ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীজুড়ে আমাদের একটা বড় রকম সমর্থন গড়ে উঠেছে, যে কারণে অপরপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। পদে পদে ব্যাহত হচ্ছে যেখানে যায়। বহু গল্প করছে, গল্প টেকাতে পারছে না। শেষমেষ তো ট্রাম্পকে নিয়ে গল্প, সে অপপ্রচার চালাতে গিয়েও চালাতে পারল না।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত আজকের এই সভা। আজকের বৈঠক খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র জনতার ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই সুযোগ পেয়েছি। সেই ত্যাগকে আমরা কেউ যেন অসম্মান না করি। তাদের আত্মত্যাগ যেন পরবর্তী প্রজন্মও স্মরণ করে। আমরা সবাই মিলে সব রকমের চেষ্টা করবো তাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে। আমরা যেন এমন একটা দেশ গড়তে পারি যা সুশৃঙ্খলভাবে চলবে। যে প্রাতিষ্ঠানিক আইনি কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিলো সে কাঠামো থেকে আমরা যেন পূর্ণরূপে বেরিয়ে আসতে পারি।
তিনি বলেন, অতীতে দেশকে একটা তামাশায় পরিণত করা হয়েছিল। আইন বলে কিছু ছিল না। যারা আত্মত্যাগ করেছে তারা আমাদের একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হওয়ার দায়িত্ব দিয়ে গেছে। সেই নতুন বাংলাদেশ গড়তে কি আইন কানুন লাগবে সেজন্যই আমরা সংস্কার কমিশন গঠন করি। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে আমরা এখান থেকে কতটুকু গ্রহণ করবো, কত দ্রুত গ্রহণ করবো আর কীভাবে অগ্রসর হবো। এখন রাজনীতিবিদদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করা দরকার। বাস্তব আলোচনায় সংস্কার প্রস্তাবে কোনটা কাজে লাগাতে পারবো কোনটা লাগবে, কোনটা লাগবে না আর কোনটা সংশোধন করলে ভালো হবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, ঐক্যমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশগুলো আমরা রাজনৈতিক দলের সামনে নিয়ে এসেছি। যেহেতু রাজনীতিবিদরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের বলতে হবে সমাজের কাঠামোর কোন কোন জায়গায় কী করতে হবে কীভাবে করতে হবে। সরকার শুধু সাচিবিক কাজগুলো করে দিয়েছে। তিনি আরও জানান, নতুন বাংলাদেশ গড়তে আইনের পরিবর্তন দরকার। আর তা হবে ঐক্যের ভিত্তিতে। কারোর ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে না। পরিবর্তন করবে রাজনৈতিক দলগুলো। সরকার সাচিবিক সহযোগিতা দেবে। শুধু বাংলাদেশের জনগণই নয় সারা পৃথিবীর মানুষ আমাদের সমর্থন দিচ্ছে তাই বিরোধীপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। এত সমর্থনের পরও নতুন বাংলাদেশ ঘুরতে না পারলে এটা ভাগ্যের ব্যর্থতা হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা একটা লন্ডভন্ড অবস্থায় দায়িত্ব নিয়েছি। এই ৬ মাসে আমাদের দলমত নির্বিশেষে সবাই সমর্থন দিয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে ৬ মাসে আমরা যেভাবে ঠিক আছি, দ্বিতীয় অধ্যায়ে ঠিক থাকতে পারলে তৃতীয় অধ্যায়ে আর দুশ্চিন্তা থাকবে না। তখন আমরা সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারবো।