আওয়ামীলীগের নিবন্ধন বা নিষিদ্ধ করার দাবির প্রেক্ষাপটে দলটির নেতাকর্মীদের একমাত্র আশা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু একটা করবে ভারত। দেশে প্রবল চাপের মুখে থাকা দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকে ভারত কী ভূমিকা নিচ্ছে সেই অপেক্ষায় আছেন। তাদের আশা ভারত কিছু একটা ভূমিকা রাখবে যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়াবে এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। এমনই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলা।
তবে এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারিতে ইউনূস সরকারের পাঠানো দূতকে গ্রহণ করেছে দিল্লি। জানা যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যকার বৈঠকের পরই বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার নিয়োগ প্রস্তাব গ্রহন করে দিল্লি।
এদিকে আওয়ামীলীগের প্রত্যাবর্তনে মোদির দিকে তাকিয়ে আছে দলটির নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকালে সেখানে তাকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আলোচনা-বক্তব্য-মন্তব্যে ভারতের ভূমিকা নিয়ে একটা প্রত্যাশা লক্ষ্য করা যায়।
আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দলটির বহু নেতাও 'আত্মগোপন করে' ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছেন। ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশে ও দেশের বাইরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের কর্মী-সমর্থকরা প্রত্যাশা করছেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারত যে ভূমিকা নিয়েছে এরপর তারা একটি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে এমন আশা ও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মী।
প্রতিবেদনে জানা যায়, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, বিশেষ করে সনাতন বা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর-মন্দিরে যেসব হামলা হয়েছে সেটি ভারত ভালো চোখে দেখছে না এবং ভারত তাদের স্বার্থেই এ পরিস্থিতিতে কিছু একটা উদ্যোগ নেবে বলে 'আভাস' পেয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের বোঝাপড়ার সারমর্ম হলো, ভারতের একটা ভূমিকা থাকবে।
দেশে অবস্থানরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্যমসারির একজন নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ভারত এরই মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার কথায়–– ভারতের স্বার্থ এখানে জড়িত। "ভারত অবশ্যই কিছু একটা করবে। আমার তো মনে হয় ভারত ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছে। এক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকা একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোবে মনে হচ্ছে।" "হতে পারে বাংলাদেশের ব্যাপারে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ বাড়ানো হবে। এছাড়া বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহায়তার ক্ষেত্রেও ভারত ভূমিকা রাখতে পারে," এমনটাই বলেছেন তিনি।