চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘ছোট সাজ্জাদ’ রাজধানীতে গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ উত্তর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. জাহাংগীর।

‘বুড়ির নাতি’ নামে পরিচিত সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ। গত ২৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ল্যাংটা করে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। পরে গত ৩০ জানুয়ারি সাজ্জাদকে ধরতে তথ্যদানকারী কিংবা সহায়তাকারীকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

লাইভে সাজ্জাদ বলেন, ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাবেন। প্রয়োজনে মরে যাব। কিন্তু হার মানব না। ফেসবুক লাইভে ওসিকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুকে ল্যাংটা করে পেটাবো’। এ ছাড়া পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়। পরে এ ঘটনায় জিডি করেন ওই বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান।

সর্বশেষ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন মোড়ে ছোট সাজ্জাদকে ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় সে। গুলিতে পুলিশের দুই সদস্যসহ মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হন।

অপরাধজগতে পা রেখে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সাজ্জাদ। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি চট্টগ্রাম বিভাগের এক তরুণ নেতার আশ্রয়ে চলে যান সাজ্জাদ। নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও হাটহাজারী থানার প্রায় তিন লাখ বাসিন্দা তার আতঙ্কে দিনাতিপাত করেন। তার চাঁদা দাবির বিষয়টি অনেকটা প্রকাশ্যেই চলে। মূলত নির্মাণাধীন ভবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলেন এ সন্ত্রাসী। সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। বায়েজিদ বোস্তামী থানাসংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে তিনি।

জানা গেছে, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া জাগরনী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে মাইক্রোবাস থেকে নেমেই স্থানীয় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে (২৭) গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ বাহিনী। তারও আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও দুজন গুলি করতে করতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর ওই ভবন মালিকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

গত বছর ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরেই এ খুন হয়। এ চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের ঘটনার দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।


এমআর

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়লেন এসি মিজান Mar 17, 2025
img
৯৫ দিন ধরে সাগরে ভাসছিলেন, অবশেষে উদ্ধার Mar 17, 2025
img
ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেফতার Mar 17, 2025
ঈদ যাত্রায় রাস্তায় ডা'কা'ত''দের নিয়ে যা বললেন হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা Mar 17, 2025
ডিবি হারুনের সম্পদের খোঁজে দুদক কর্মকর্তাদের নাভিশ্বাস Mar 17, 2025
হাসিমুখে আদালতে শাহজাহান খান Mar 17, 2025
যে গ্রামে ছয় কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় কাঠের মই বেয়ে Mar 17, 2025
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হতে দিচ্ছে না চীন! Mar 17, 2025
হাই বাজেট ‘কৃষ ৪’ নির্মাণে সাহস পাচ্ছেননা প্রযোজকরা Mar 17, 2025
img
ইতিকাফের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে Mar 17, 2025