নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দড়িকান্দি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে, ভুক্তভোগী দিবা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. নাজিম উদ্দিন এবং গাড়ি চালক মো. মামুন শেখ সিটি ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে চাঁদপুরের অফিসে যাচ্ছিলেন।
সোনারগাঁয়ে দড়িকান্দি ব্রিজে পৌঁছালে একটি ট্রাক তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। এরপর কিছু ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ি তল্লাশি করার চেষ্টা করলে চালক রাজি না হলে পিস্তল দিয়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর অজ্ঞাত ৫ জন ব্যক্তি তাদেরকে গাড়ির পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চোখ বেঁধে তাদের মোবাইল ফোন, টাকা এবং অন্যান্য মালামাল ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাজিম উদ্দিন সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে ভুক্তভোগী আরও উল্লেখ করেন, অজ্ঞাত ডাকাতরা গাড়িতে করে আমাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করে এবং কয়েকটি স্থানে গাড়ি থামায় এবং সর্বশেষ সিলেট মহাসড়কের একটি অজ্ঞাত জায়গায় আমাদের নিয়ে যায় এবং হ্যান্ডকাফ খুলে হাত গামছা দিয়ে বেঁধে দিয়ে তারা চলে যায়।
এ বিষয়ে ম্যানেজার মো. নাজিম উদ্দিন গ্ণমাধ্যমকে বলেন, ১ কোটি ১০ লাখ টাকা দুটি কাপড়ের ব্যাগে করে গাড়ির পেছনের সিটে রেখেছিলাম। চোখ বাঁধা থাকায় ডাকাতরা কখন যে আমাদের গাড়ি থেকে টাকাগুলো সরিয়ে নেয় আমরা বুজতে পারিনি। গাড়িতে বারবার আমাদের গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। এজন্য চুপ করে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। তারা আমাদেরকে হোটেলে খেতে যাচ্ছি বলে গাড়ির দরজা খোলা রেখে চলে যায়। পরে আমি আমার বাঁধা হাত দিয়ে ড্রাইভার মামুন শেখের চোখ ও মুখ বাঁধা গামছা খুলে দেই। পথচারী লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি আমরা সিলেট মহাসড়কে রয়েছি।
ছুটির দিনে ব্যাংক থেকে কীভাবে এত টাকা তুলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি গ্ণমাধ্যমকে বলেন, যে সকল ব্যাংক বিকাশে লেনদেন করে তারা ছুটির দিনেও দুপর ২টা পর্যন্ত লেনদেন করে। আমাদের মালিক দেশের বাহিরে থাকায় উনার সই করা চেকের মাধ্যমে আমরা টাকা তুলেছি।
নাজিম উদ্দিন বলেন, সোনারগাঁও থানা পুলিশ ডাকাতির জায়গা শনাক্ত করে পরে আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করে। কিন্তু আজ থানা থেকে ফোন দিয়ে পুলিশ জানিয়ে ছিল তারা কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে আমাদের থানায় গিয়ে শনাক্ত করতে হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় থানায় যাওয়ার পথে পুলিশ আমাদের জানায় হাইওয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করতে। হাইওয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে বলে এটা আমাদের কাজ না আপনারা থানায় যোগাযোগ করেন। আমাদেরকে থানায় আসতে বলে পুলিশ এখন বলছে তারা কিছুই জানে না। এরপর ওসি (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান সাহেবকে ফোন করলে তিনি আমাকে বলেন- ‘আমাকে ডিস্টার্ভ কইরেনই না, আমাদের কি আর কোনো কাজ নাই।’
সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী গ্ণমাধ্যমকে বলেন, এমন কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগীর তথ্য অনুযায়ী দুপুরে ডাকাতি হলেও রাতে কেন অভিযোগ করতে আসলো। সারাদিন তাহলে কি করলো।
তিনি আরও বলেন,আমরা একটা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে কিছু ভিডিও ফুটেজ পাই। সেই ফুটেজ পর্যালোচনা করে কোম্পানির কর্মকর্তার কথার সাথে কোনো মিল পাইনি।
এসএস