ডিবি হারুনের সম্পদের খোঁজে হাঁপিয়ে উঠেছেন দুদক কর্মকর্তারা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিতর্কি হারুন অর রশীদের সম্পত্তির বিবরণ। কীভাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এত বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে পারেন, তা নিয়ে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউ হাইড পার্ক এলাকায় স্ত্রীর নামে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের একটি বাড়ি কিনেছেন হারুন। রাজধানীর উত্তরাতেই বিভিন্ন সেক্টর ও সড়কে রয়েছে ডিবি হারুনের একাধিক প্লট, ফ্ল্যাট ও ভবন। ৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডে রয়েছে ছয়তলা একটি আলিশান বাড়ি। একই রোডের মাথায় আটতলা আরেকটি বাড়ি আছে হারুনের। এই বাড়ির চতুর্থ তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। এসব ছাড়াও
পাশাপাশি উত্তরাতে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ডিবি হারুনের রয়েছে আরো অঢেল সম্পদ। এসবের মধ্যে রয়েছে একাধিক বহুতল মার্কেট, বহুতল বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক ভবন, কয়েক ডজন ফ্ল্যাট, বেশ কয়েক কাঠার প্লট, গোডাউন, শোরুম।
ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বনানী কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ২০ কাঠার প্লট দখল করে একটি কোম্পানির কাছে ৭০ কোটি টাকায় বিক্রি করেন হারুন। টঙ্গীর সাতাইশ মৌজায় আট বিঘা জমিতে কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠান।
টঙ্গীর আশুলিয়া মৌজায় ছায়াকুঞ্জ-৫ আবাসিক প্রকল্পের ভেতরে ১২ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক হোটেল। এছাড়া হারুন অর রশীদের নামে কিশোরগঞ্জে মিঠামইনে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট নামে একটি বিলাসবহুল রিসোর্ট রয়েছে।
গাজীপুরে রয়েছে সবুজ পাতা রিসোর্ট এবং ‘গ্রিন টেক’ নামে আরও একটি বিলাসবহুল রিসোর্টের শেয়ার। এ ছাড়া নন্দন পার্কেও শেয়ার আছে হারুনের। আছে আমেরিকান ডেইরি নামে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ। এই কোম্পানির এমডি হারুনের স্ত্রী। ময়মনসিংহের ত্রিশালের সাবেক এমপি আনিসের সঙ্গে ফিশারিজ এবং রেস্টুরেন্টের যৌথ ব্যবসা আছে হারুনের। বিদেশে অর্থ পাচারের সুবিধার জন্য গড়ে তোলা হয় নিজস্ব মানি এক্সচেঞ্জ।
হারুন অর রশীদ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চাকরি পান। পরে জানা যায়, তার বাবা ছিলেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ২০০১ সালে তার পদায়ন আটকে দেয় বিএনপি সরকার। ওয়ান-ইলেভেনের সময় চাকরি স্থায়ী হয় তার।
২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন। সেই থেকে পতিত শেখ হাসিনার নেক নজরে ছিলেন। যেখানেই গেছেন, তা নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পুলিশ সদর দপ্তর কিংবা ডিবি—সব জায়গাতেই বিতর্কে জড়ান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এসএম/টিএ