রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভুয়া এনজিও খুলে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জামানত সংগ্রহের পর প্রতিষ্ঠানটি হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতারণার সঙ্গে বাড়ির মালিকের স্ত্রীর যোগসাজশ থাকতে পারে। এ ঘটনায় সোমবার (১৭ মার্চ) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ১০ মার্চ গোয়ালন্দ পৌরসভার নিলু শেখের পাড়ায় নাজমুল হাসানের বাড়ির নিচতলায় ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ নামে অস্থায়ী কার্যালয় খুলে কার্যক্রম শুরু করে প্রতারক চক্র।
এনজিওকর্মী পরিচয়ে সদস্য সংগ্রহ করে সহজ শর্তে মোটা অংকের ঋণ দেয়ার আশ্বাস দেয় তারা। তবে ঋণ পাওয়ার আগে প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা জামানত জমা দিতে বলা হয়।
ভুক্তভোগী জামতলা হাটের সাইকেল মেকানিক সাইদুল খান জানান, প্রতারকরা তাকে ৮ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ৭৫ হাজার ১০০ টাকা জামানত নেয়। ১৮ মার্চ ঋণ নিতে গেলে দেখতে পান, কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।
একইভাবে, গোয়ালন্দ বাজারের ব্যবসায়ী ইমরান শেখ ১০ লাখ টাকা ঋণের আশায় এক লাখ টাকা জামানত দেন। ১৭ মার্চ কার্যালয়ে গেলে দেখেন, প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ।
রাজবাড়ী সদরের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, ৮ লাখ টাকা ঋণের জন্য তিনি ৮০ হাজার টাকা জমা দেন। সুদের ওপর ধার করে টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। পরে দেখতে পান, প্রতারকরা পালিয়েছে। এভাবেই প্রতারক চক্র শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আমির আলী বলেন, ‘বাড়ির মালিক বলছেন তিনি প্রতারকদের চেনেন না। কিন্তু কোনো কাগজপত্র ছাড়া কীভাবে তারা ভাড়া পেল? আমি মনে করি, বাড়ির মালিকও এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।’
তবে বাড়ির মালিকের স্ত্রী প্রান্তি সুলতানা দাবি করেন, ‘তিন ব্যক্তি এসে মাসিক ৭ হাজার টাকায় তিন বছরের জন্য নিচতলা ভাড়া নেন। চুক্তিপত্র চাইলেও তারা সময় চেয়েছিল। ১৭ মার্চ সকালে দেখি, তারা পালিয়েছে।’
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রতারক চক্রকে ধরতে পুলিশ কাজ করছে।’
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন নামে উপজেলায় কোনো বৈধ এনজিও নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এফপি/ টিএ