খুলনার আলোচিত এসআই শাহ আলমের ৭ বছরের কারাদণ্ড

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলমকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৩ মার্চ) খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

এক দশক আগে খুলনার খালিশপুরের মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় মিল্কি আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসানের বাড়ির গৃহকর্মী সীমাকে হত্যা ও মরদেহ গুমের মিথ্যা গল্প তৈরি করেছিলেন এসআই শাহ আলম। পরে পুলিশের আরেকটি দল সীমাকে জীবিত উদ্ধার করে। এই ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ চাওয়া ও হয়রানির অভিযোগে দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় মিল্কি আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক মাসুদ হাসান ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন ২০০৯ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমানের ৯ বছরের মেয়ে সীমাকে তাদের বাসার কাজের জন্য নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন কাজ করার পর সীমা ওই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় সীমার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে গৃহকর্তা মাসুদ হাসান, মোহাম্মদ আলী খোন্দকার ও মো. মাসুদ শেখকে আসামি করে ২০১২ সালের ৭ মে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খালিশপুর থানার তৎকালীন এসআই শাহ আলম মাসুদ হাসানের পরিবারের কাছে ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু ঘুষ না পেয়ে এসআই শাহ আলম নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘হত্যা নাটক’ সাজান। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া উপজেলার বিল পাবলার একটি খাল থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি ২৮/৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাত নারীর মরদেহকে সীমা হিসেবে বর্ণনা করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালান। এ ঘটনায় মাসুদ হাসান ও তার স্ত্রীকে গ্ৰেপ্তার করে নির্যাতন করেন শাহ আলম। পরে সীমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘুষ না দেওয়ায় গৃহকর্মী সীমা হত্যা নাটক সাজানো এবং সীমাকে উদ্ধারের ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন। ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট শাহ আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইয়াসিন আলী জানান, দুটি ধারায় এসআই শাহ আলমকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর শাহ আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ