আগামী ৩ মে অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের ভোটে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সঙ্গে লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে একাধিক জনমত জরিপে ধারণাও পাওয়া গেছে।
সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে সরকার চালানো লেবার পার্টির নেতা, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ শুক্রবার ক্যানবেরার পার্লামেন্ট হাউজ থেকে সংসদের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ভোটের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
দেশটিতে প্রতি তিন বছর পর পর নিম্নকক্ষের ভোট হয়, তাতেই ঠিক হয়- কারা সরকার চালাবেন।
বিবিসি লিখেছে, বিভিন্ন জনমত জরিপে দেশটির দুই প্রধান দলের মধ্যে খুব সামান্য ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে যে কোনো দলের ১৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৭৬টি জিততে হবে।
কোনো দলই তা না করতে পারলে গড়তে হবে জোট সরকার। এবার সে সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে বড় দলগুলোকে ছোট ছোট দল ও স্বতন্ত্র এমপিদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। গতবার ছোট দলগুলো এবং স্বতন্ত্র এমপিরা মিলে যে ভোট পেয়েছিলেন, তা অনেককেই চমকে দিয়েছে।
এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় জীবনযাপনের ব্যয় নিয়ে আলোচনাই প্রাধান্য বিস্তার করবে বলে মনে হচ্ছে। লেবাররা যদি শেষ পর্যন্ত হেরেই যায়, তাহলে তারাই হবে প্রায় এক শতকের মধ্যে প্রথম কোনো সরকার যারা এক মেয়াদের পরই গদি হারাল।
শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে আলবানিজ জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে তার করা অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বিনামূল্যে আরও স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ ও কর কমানোসহ নানান পরিকল্পনাও তুলে ধরেছেন তিনি। বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী পিটার ডাটনের জয় মানে দেশ একধাপ পিছিয়ে যাওয়া।
অন্যদিকে লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের নেতা ডাটন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া আরও তিন বছর লেবার সরকার রাখার মতো অবস্থায় নেই।
“যে প্রশ্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি নাগরিকের করা দরকার, তা হচ্ছে- আমাদের দেশ কি তিন বছর আগের তুলনায় ভালো আছে? লেবার পার্টির বাজে সব সিদ্ধান্তের কারণে অস্ট্রেলীয়দের এখন খুবই খারাপ সময় যাচ্ছে, তাদের সাহায্য দরকার,” বলেছেন তিনি।
তিন বছর আগের নির্বাচনে আলবানিজের দল লিবারেল-ন্যাশনালদের হারিয়েই ক্ষমতায় বসেছিল। আগের ৮ বছরে ৬ বার প্রধানমন্ত্রী বদলানো অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্থান-পতন দেখা যাচ্ছিল, আলবানিজের সময়ে এসে তা খানিকটা থিতু হয়।
এবারের নির্বাচনে আগের চেয়ে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী পরিবেশবাদী দল অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস, গত নির্বাচনে তারা রেকর্ড আসন জিতেছিল।
বাড়িঘরের খরচ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, অভিবাসীর চাপ, বাড়তে থাকা অপরাধ কমানো- এ সবই এবার ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আলবানিজের সরকার দূষণ কমাতে সাহসী কিছু পদক্ষেপ নিলেও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি এনে দিতে পারেনি; বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতিও তার সরকারের জনপ্রিয়তা কমাতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
আরএ/টিএ