টেসলা সিইও ইলন মাস্ক বিশ্বের উচ্চপ্রতিষ্ঠিত, গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম। সাফল্য তার আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। এহেন সফল ব্যক্তিকেও কাবু করার মতো যদি কিছু থেকে থাকে, তা হল ডিপ্রেশন। এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কারও অজানা নয়।
সম্প্রতি, টেসলা কর্তা এই সাক্ষাৎকারে ডিপ্রেশন মোকাবিলায় কিটামিন ব্যবহারের কথা প্রকাশ্যে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যেই তিনি ‘হতাশার সময়’ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিটামিন নিয়ে থাকেন। সেটা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে, সঠিক অনুমোদন অনুযায়ী, খুব অল্প পরিমাণে।
সাইকিয়াট্রিস্টদের মতে, যদি সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়, তাহলে কিটামিন আশানুরূপ ফল দেয়। কিন্তু সেখানে দেখতে হবে, কী কারণে তা রোগীকে দেওয়া হচ্ছে।
কিটামিন ব্রেনের মিধ্যে গ্লুটামিন নামক এক কেমিক্যালের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। পরোক্ষ ভাবে, স্পাইনাল কর্ডে ব্যথার অনুভূতি পৌঁছনো থেকে আটকায়। তার সঙ্গে ডোপামিন রিলিজ করে আনন্দ ও মোটিভেশনের অনুভূতি আনতে সাহায্য করে। এভাবে সাধারণত ব্রেনের ‘রিওয়ার্ড পাথওয়ে’ কে কাজ করতে উদ্যোগী করে তোলে। ১৯৬০-এর সময়ে ব্যথা কমানোর জন্য এর বহুল প্রচলন থাকলেও শেষ কিছু বছরে ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় কিছু ক্ষেত্রে কিটামিন ব্যবহার হয়ে থাকে।
কিছু ক্ষেত্রে কোনও এমারজেন্সি পরিস্থিতে কিটামিন ব্যবহার করে থাকেন ডাক্তাররা। খুব কম ডোজে, স্ট্রিক্ট মেডিক্যাল সুপারভিশনে কিটামিন ইনফিউশন করে ডিপ্রেশন, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসর্ডার, অ্যাংজাইটির রোগীদের আশাপ্রদ ফল পাওয়া গেছে।
ডিপ্রেশনের যে পর্যায়ে দু’ধরনের অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট প্রেসক্রাইব করেও কোনওভাবেই চিকিৎসা কাজে দিচ্ছে না (ট্রিটমেন্ট রেজিসটেন্ট ডিপ্রেশন) বা সিভিয়র মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারের (এমডিডি) ক্ষেত্রে নিজের ক্ষতি করার প্রবণতা কমিয়ে আনতে পারে কিটামিন।
অনেকসময় কিটামিনের বেশ কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। ঝিমুনি বোধ হওয়া, হ্যালুসিনেশন, হার্টরেট বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ তার মধ্যে পড়ে। ডোজ বেশি হয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, হার্টের ওপর চাপ পড়তে পারে। অ্যালকোহল, ঘুমের ওষুধ বা অন্য কোনও ওষুধের সঙ্গে মিশলে কিটামিনের ভয়ানক পার্শ্ব- প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
কিটামিনের নাম জনসমক্ষে প্রথম আসে যখন ২০২৩ সালে আমেরিকান সিটকম ‘ফ্রেন্ডস’খ্যাত ম্যাথিউ পেরির হঠাৎ মৃত্যুর খবর নাড়িয়ে দিয়েছিল অনুরাগীদের। নেপথ্যে, ছিল কিটামিনের ওভারডোজ।
এসএম