মিয়ানমারে শুক্রবার ১২ মিনিটের ব্যবধানে হওয়া দুই দফা ভূমিকম্পে দেশজুড়ে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির সামরিক জান্তা সরকার শনিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে শুক্রবার ১২ মিনিটের ব্যবধানে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৭ ও ৬ দশমিক ৪ মাত্রার দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।
প্রথম কম্পনটি স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে অনুভূত হয়, যার উৎস ছিল মিয়ানমারের সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম ভূমিকম্পটি অনুভূত হওয়ার ১২ মিনিট বাদে দ্বিতীয় কম্পনটি অনুভূত হয়।
শনিবার মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানায়, দেশজুড়ে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২ জনের মৃত্যুর তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ২ হাজার ৩৭৬ জন আহত হয়েছে এবং ৩০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছে।
ভূমিকম্পে মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে মান্দালয়ে।ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের সবচেয়ে কাছের এই শহরে এখন পর্যন্ত ৬৯৪ জনের মৃত্যু তথ্য নিশ্চিত করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
ভূমিকম্পের কারণে রাস্তায় বড় ধরনের ফাটল তৈরি হয়েছে।
এর বাইরে রাজধানী নেপিদোতে ৯৪ জন, কিয়াউক সে শহরে ৩০ জন ও সাগাইং শহরে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়েই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
শুক্রবার ভূমিকম্প হওয়ার পর মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানী মান্দালয়ের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়, যেখানে ভেঙে পড়া ভবনের পাশাপাশি রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। শহরটি মিয়ানমারের বৌদ্ধ ঐতিহ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, “সবকিছু কাঁপতে শুরু করতেই আমরা দৌড়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে যাই। আমি নিজ চোখে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। আমার শহরের সবাই রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে, কেউই ভবনের ভেতরে ফেরার সাহস পাচ্ছে না।”
ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে ধসে পড়েছে নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন।
মিয়ানমারে শুক্রবার দুই দফায় হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপেছে পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশেও। এর মধ্যে থাইল্যান্ডেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে অন্তত ১০ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক ব্যক্তি, যাদের বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক বলে জানা গেছে।
ভূমিকম্পে ব্যংককে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এফপি/এস এন