নানা বাস্তবতা মিলিয়ে ব্রাজিলের কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন জর্জ জেসুস। যদিও পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের প্রধান পছন্দ রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। কিন্তু তার সঙ্গে স্প্যানিশ জায়ান্টদের চুক্তি এবং ক্লাব বিশ্বকাপ মিলিয়ে সহসাই ব্রাজিলের পাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাই তো জেসুসের দিকেই হাত বাড়াচ্ছে ব্রাজিল। কিন্তু আল-হিলালের এই কোচের সঙ্গে কিছুটা বিরূপ সম্পর্ক রয়েছে নেইমার জুনিয়রের।
চলতি বছর জানুয়ারির শেষ নাগাদ আল-হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে যোগ দেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। তার যেমন ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ছিল, তেমনি আল-হিলালের সঙ্গেও শেষটা ইতিবাচক ছিল না। একের পর এক ইনজুরির কারণে সৌদি ঠিকানায় দেড় বছর থাকাকালে মাত্র ৭টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন নেইমার। সে কারণে চোট কাটিয়ে ফিরলেও, আল-হিলাল কোচ জেসুস বলেছিলেন— নেইমারের আর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় খেলার মতো সামর্থ্য নেই। যা শুনে এই তারকা ফরোয়ার্ডও হতাশা প্রকাশ করেন।
এবার সাবেক ক্লাব কোচ যখন ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে জোর আলোচনা চলছে, সেই সময় এসেছে নেইমারের সঙ্গে বিরূপ সম্পর্কের প্রসঙ্গটিও। ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবল প্রতিযোগিতা নিয়ে পুরস্কার অনুষ্ঠান ‘পোলিস্তা অ্যাওয়ার্ড’-এ সেরা গোলের জন্য পুরস্কার জিতেছেন সান্তোসের এই ফরোয়ার্ড। সেখানেই তার কাছে জেসুসের কোচ হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে নেইমার বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই, আমি একজন ফুটবলার। আমাকে এখান থেকে দূরে রাখুন, আমি এর বাইরে আছি।’
এ ছাড়া ব্রাজিলের আরেকটি গণমাধ্যম ‘কেজ টিভি’কে তিনি বলেন, ‘আমি খেলার জন্য প্রস্তুত। পুরোদমে অনুশীলন করছি, কিন্তু আমার আরও ম্যাচ খেলা প্রয়োজন। অবশ্যই আমি জর্জ জেসুসের করা মন্তব্যে হতাশ হয়েছিলাম, তবে আমি এই মুহূর্তে একই পরিস্থিতিতে নেই। নিজের অনুশীলনেই আমি শারিরীক ফিটনেস দেখিয়েছি, এখন খেলতে সক্ষম, যা স্বাভাবিক অন্যান্য সব অ্যাথলেটের মতোই। আর আমরা দলীয়ভাবে খেলি, পারফরম্যান্স এবং গোল করাটা আমার ওপর নির্ভর করছে।’
সৌদি ক্লাব ছেড়ে আসার পর অবশ্য নেইমারকে নিয়ে আবার ভিন্ন মতামত জানিয়েছিলেন জেসুস। পর্তুগিজ এই কোচ ব্রাজিল তারকার সামর্থ্যের প্রশংসা করার পাশাপাশি তাকে বিদায়ের মুহূর্তটা আশানুরূপ ছিল না বলেও জানান, ‘আমি কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকে সেই আমার দেখা সেরা খেলোয়াড়। তবে তার সঙ্গে সময়টা আমার সঙ্গে সুখকর ছিল না, বিশেষত আমার সঙ্গে।’ মূলত ইনজুরির কারণে এই তারকাকে না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ ছিলেন জেসুস।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রাজিলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন নেইমার। সম্প্রতি কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ মাস পর স্কোয়াডে নাম লিখিয়েই ফের চোটের জন্য ছিটকে যান। তার অনুপস্থিতিতে ব্রাজিল কলম্বিয়াকে হারালেও, পরের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আলবিসেলেস্তেদের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়। যা বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় কোচ দরিভাল জুনিয়রের। গতকালই তাকে বরখাস্ত করার কথা জানায় ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। এই মুহূর্তে সিবিএফ ব্রাজিলের যোগ্য কোচ পাওয়ায় পুরো মনোনিবেশ করছে।
এমআর