কোথায় সেই রাজকীয় জীবন আর কোথায় সেই ক্ষমতার দাপট? একসময় যারা ছিলেন রাজনৈতিক মহলে অপ্রতিরোধ্য, তারা আজ চার দেয়ালের মাঝে বন্দি। ঈদের খুশি ভুলে কারাগারের নিঃসঙ্গ কুঠুরিতেই কাটছে আ.লীগ নেতা কর্মীদের সময়।
মাত্র সাত মাস আগেও ঈদ মানেই ছিল দাপুটে আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য জমজমাট আয়োজন। ভক্ত-অনুসারীদের ভিড়, সেলামি ও শুভেচ্ছার লম্বা তালিকা। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যারা পালাতে পারেননি, তাদের এবারের ঈদ কাটছে কারাগারের চার দেয়ালের ভেতর।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, একসময় যিনি ক্ষমতা আর অর্থবিত্তের প্রতীক ছিলেন, এখন নির্জন কক্ষে ঈদ করছেন অসহায়ের মতো। একই অবস্থা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর, যার বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর বিপুল অর্থ উদ্ধার করা হয়।
সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার শেষ বয়সে এসে কারাগারের যন্ত্রণা সইতে না পেরে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আদালতে তিনি বলেছিলেন, আমার ৭৬ বছর বয়স, চোখ ৭০ শতাংশ নষ্ট। পরিবারের খোঁজও নিতে পারছি না।
একসময় অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অথচ এখন তিনিই কারাগারে সবচেয়ে অসহায় বন্দিদের একজন। গত ১০ মার্চ আদালতে হাজিরা দিতে এসে বলেছিলেন, ‘কথা বললেই রিমান্ড ও মামলার সংখ্যা বাড়ে, হাতকড়া পরিয়ে আটকে রাখা হয়!
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারাও এবার কারাগারে ঈদ কাটাচ্ছেন।
এছাড়া দলের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও শতাধিক নেতা দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং ও আন্দোলন দমন অভিযানের মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর বহু নেতা পালিয়ে যান, যারা পারেননি, তারা এখন কারাগারে। ক্ষমতার মোহে যারা ভুলে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা, তাদের ঈদের আনন্দও এবার বন্দিদশার গ্লানিতে ঢাকা পড়েছে।
এসএন