তলবেও ফেরেননি অনেক কূটনৈতিক, কয়েকজন আশ্রয় নিয়েছেন তৃতীয় কোনো দেশে

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব নিয়েই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, জার্মান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে।

২৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে ঢাকায় ফেরার আদেশ দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছয় মাস পার হলেও এখনো ফেরেননি পেশাদার এই কূটনীতিক। জানা গেছে, বৃটেনেই অবস্থান করছেন তিনি।

সাবেক পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারী সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনিও আর দেশে ফেরেননি, চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
একইভাবে জাপানে কর্মরত রাষ্ট্রদূত সাহাবউদ্দিনও দেশে ফিরেননি সরকারি নির্দেশনা মেনে। সরকারি নির্দেশনা মেনে ঢাকায় ফেরেননি এমন অনেক কূটনীতিক। যাদের কেউ কেউ কর্মস্থল ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন তৃতীয় কোনো দেশে।

এসব ঘটনাকে ‍অস্বাভাবিক ও অপেশাদার উল্লেখ করে বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বহির্বিশ্বে নষ্ট হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। তাই সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পাশাপাশি কূটনীতিকদের দেশে ফিরিয়ে ন্যায্যতা নিশ্চিতের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, কারণ যারা রাষ্ট্রদূত ছিলেন, তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রিপ্রেজেন্ট করেন। সুতরাং তারা যদি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেস মেনে ফিরে না আসেন, সেটা আন্তর্জাতিক মহলকে ভুল বার্তা দেয়। এগুলো থেকে হয়তো আন্তর্জাতিক মহল এটাই চিন্তা করতে পারে যে রাষ্ট্রদূতদের অধিকার হরণ হচ্ছে, সুতরাং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কিংবা স্বচ্ছ বিচারের জায়গাগুলো হয়তো কম। সুতরাং আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মহল থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেয়া দরকার।

তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশীদ। সরকারের আদেশ অমান্য করে কানাডায় চলে গেছেন তিনি। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত নানা ইস্যুতে লিখে চলেছেন তিনি। এ নিয়ে অস্বস্তি আছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও।

এ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেছেন, চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে নিশ্চয় তিনি পারেন। পরবর্তীতে যদি সরকার বা দেশের জন্য ক্ষতিকারক কোনো বক্তব্য দেন, তাহলে উনি যে দেশে থাকবেন, সে সরকারের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারি। আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা চাইতে পারি। কারণ, ব্যক্তিগত পছন্দ যে কারোরই থাকতে পারে। কিন্তু স্টো সামষ্টিকভাবে যদি দেশ ও সরকারের জন্য প্রতিকূলতা তৈরি করে, সেক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে সরকার স্বাগতিক দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।

চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ প্রাপ্তরা ফিরুক বা না ফিরুক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনে সদর দফতরে ফেরাতে সরকারকে কঠোর হওয়ার তাগিদ বিশ্লেষকদের।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

২৭ কোটির রিশব পন্ত এখনো পেরোতে পারেননি ২৭ রান! Apr 05, 2025
পরীমনির বাসার সিসি টিভি ফুটেজ প্রকাশ করতে বললেন গৃহকর্মী Apr 05, 2025
img
খুলনায় শিলাবৃষ্টি, ধান, আম ও তরমুজ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা Apr 05, 2025
img
ক্যাটরিনাকে নিয়ে অজানা তথ্য ফাঁস করলেন নৃত্যপরিচালক Apr 05, 2025
img
শেখ হাসিনার ভুলে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা খুন হন : আমানউল্লাহ আমান Apr 05, 2025
img
বিদেশি মিডিয়ার মিথ্যা সংবাদের কাউন্টার দিয়ে ওদের মুখে চুনকালি দিন Apr 05, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে : ইশরাক Apr 05, 2025
img
ট্রাম্পের শুল্কনীতি কি ভারতে অর্থনৈতিক সংস্কারের নতুন সূচনা করবে? Apr 05, 2025
img
হাসিনাকে ঢাকার কাছে প্রত্যর্পণ করবে ভারত, বিশ্বাস প্রেস সচিবের Apr 05, 2025
img
জরুরি বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা Apr 05, 2025