‘দলের নিবন্ধন পেতে যা যা প্রয়োজন, তা নিয়ে কাজ করছি’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেছেন, এখন সময় এলাকার মানুষের সমস্যা বের করা। যারা প্রার্থী হবে তাদের উচিত এলাকার সমস্যাগুলো জানা। আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন এবং সমস্যা জানার চেষ্টা করছেন। আমাদের হাতে কম সময় আছে এ কারণেই দলের নিবন্ধন পেতে যা যা প্রয়োজন রয়েছে তা নিয়ে কাজ করছি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত প্রার্থী দেওয়া নিয়ে দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু করিনি। তবে অনেকেই নিজেরা নিজেদের মতো করে এমপি হওয়ার জন্য গণসংযোগ চালাচ্ছেন। বর্তমানে আমাদের মূল দৃষ্টি এবং আমাদের রাজনীতি দাঁড়িয়ে আছে জুলাই আন্দোলনে মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাইয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বিচারের ওপর। তবে আমাদেরকে বিভিন্ন দল বাধ্য করছে নির্বাচনী আলোচনায় যেতে, পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণ করতে।

শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এনসিপির আদর্শ এবং এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, আমরা মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সার্বভৌমত্ব এবং সব বাঙালির অধিকার নিশ্চিত করতে চাই এবং যে কোনো প্রকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি তার বিরুদ্ধে লড়ে সার্বভৌম স্বাধীন ভূখণ্ড তৈরি করতে চাই। আগামী নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে নির্বাচন মুহূর্তে মাঠের অবস্থা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্বাচনি যে কোনো সমঝোতা জোট হতে পারে। তবে তা নিয়ে আমরা অগ্রিম কিছু ভাবছি না।

তিনি বলেন, আমাদের বলা হয় কিংস পার্টি, কিন্তু আমাদের টপটেন নেতাকর্মীদের কেউ কোথাও গেলে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের হাতে মার খায়। বর্তমান সময়ে চার থেকে পাঁচটি প্রমোশন পেয়ে বিএনপি জামায়াত সমর্থিতসহ বিগত ১৫ বছর ধরে বঞ্চিতরাই সচিব হয়েছেন। এর মানে কিংস পার্টি তারাই যাদের মাধ্যমে সচিবালয় থেকে শুরু করে ডিসি, এসপি এবং ইউএনও অফিস পর্যন্ত পরিচালিত হয়।

এনসিপি নেতা বলেন, কিংস পার্টি মানে হচ্ছে রাষ্ট্রের এক্সিকিউটিভ ক্ষমতাগুলো কারা ব্যবহার করছে। বিএনপির মধ্যে ভয় থাকা স্বাভাবিক। কারণ তাদের অতীত ইতিহাস এরকমেরই। তারা প্রথমে সরকারে এসেছে তারপর দল গঠন করেছে। সরকার প্রধান থেকে দলীয় প্রধান হয়েছে। তাদের এই দিকগুলো বর্তমান সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু আমরা মনে করি, ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশে একটি অভ্যুত্থান হয়েছে। যা অনেক রাজনৈতিক নেতারাই স্বীকার করতে চান না।

বর্তমান সময়ে নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান চিপ অ্যাটর্নি জেনারেল বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক ছিলেন। দুজন সমন্বয়ক যারা কোনো দলীয় পোস্টে নেই। তারা গণঅভ্যুত্থানের নেতা, যার মধ্য দিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে যদি প্রশ্ন আসে তাহলে বিএনপি সমর্থিত যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদেরকেও তারা সরিয়ে নিয়ে আসার কথা বলেন কিনা। এ ছাড়া ২০০৬ সালে একজন বিচারপতিকে রাখার জন্যে সংবিধান পরিবর্তন করে বয়স বাড়ানোর ইতিহাসও আমরা জানি। একজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কিরকম চায়? তাদের প্রেসক্রিপশনে সেরকম লোক আসলেই নিরপেক্ষ স্বীকার করবেন। তবে আমরা মনে করি দেশের জনগণই নিরপেক্ষতা বিচার করবেন।

তিনি আরও বলেন, গত সাত মাসে বর্তমান সরকার অনেক জায়গায় ব্যার্থ হয়েছে। তবে এ সময়ে সরকারের উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক জায়গাগুলোতে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা জনমানব ও বাংলাদেশপন্থি কিনা এটাই আমাদের কাছে মুখ্য বিষয়। যদি দেশের মানুষ এটা না চায় তাহলে একটি গণভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হোক তারা কি চায়?

এফপি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রেমে ব্যর্থ হলে দাবা খেলি, বাথরুম পরিষ্কার করি : আদিত্য Jul 01, 2025
img
যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রাশেদ খানের পদত্যাগ Jul 01, 2025
img
আইপিএলের সাবেক চেয়ারম্যানকে ১০ কোটি ৬৫ লাখ রুপি জরিমানা Jul 01, 2025
img
দেশে কত দামে স্বর্ণ ও রুপা বিক্রি হচ্ছে আজ? Jul 01, 2025
img
শাকিব খানের নামের আগে ‘মেগাস্টার’ শব্দে আপত্তি জাহিদ হাসানের! Jul 01, 2025
বাস্তব জীবনে নিজের বিপদের সময় কাউকে পাশে পাইনি: পরীমনি Jul 01, 2025
img
সিরিয়ার ওপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প Jul 01, 2025
img
হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হলো ডকুমেন্ট স্ক্যানের নতুন ফিচার! Jul 01, 2025
img
ছাত্রদল নেতার হাতে প্রাণ গেল কৃষকের Jul 01, 2025
img
আমিরের দিকেও হাত বাড়িয়েছিল মাফিয়া চক্র! Jul 01, 2025
img
১৯ বছর পর আবারও অ্যাওয়ার্ড নাইট চালু করার ঘোষণা দিল বিসিবি Jul 01, 2025
img
ইন্টার মিলানকে হারিয়ে শেষ আটে ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্স Jul 01, 2025
img
জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দুরা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে : রফিকুল ইসলাম Jul 01, 2025
img
গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার ৯ বছর আজ Jul 01, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর বাগদাদ, ঢাকার অবস্থান ১৪তম Jul 01, 2025
img
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস Jul 01, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় প্রাণ গেল ৯৫ জনের Jul 01, 2025
img
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩১.৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার Jul 01, 2025
img
এনবিআর আন্দোলন: উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রজ্ঞাপনের মিল নেই Jul 01, 2025
img
দেশের ৮ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 01, 2025