নতুন মার্কিন শুল্ক নীতি কার্যকর হওয়ার দিনই তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও এই শুল্কনীতি শিথিলের কোনও লক্ষণ দেখায়নি তার প্রশাসন। ট্রাম্পের দাবি, অন্তরের কথা শুনে আচমকাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য পলিটিকো এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, বিভিন্ন দেশের ওপর পৃথকভাবে যে ‘পারস্পরিক’ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, সেটি ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মার্কিন আমদানি পণ্যে নতুন আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।
ট্রাম্প বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই শুল্কের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি। বোধহয় আজ সকালে সব আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তখন কোনও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সময় ছিল না। কেবল নিজের অন্তরের কথা শুনে যেটি সঠিক মনে হয়েছে, সেটাই করেছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ও অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গে মিলে ট্রাম্প এই পোস্ট লিখেছিলেন বলে জানান লুটনিক। তবে অনেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতার কাছেই এই ঘোষণা ছিল বিস্ময়কর।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর শেয়ারবাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেরি হয়নি। তবে তার আকস্মিক স্থগিত সিদ্ধান্তে হাওয়া বদলেও সময় লাগে না। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বাজারমূল্য বুধবারই ১ ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পায়।
স্থগিতাদেশের পর ট্রাম্প প্রশাসনের হয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে সবার আগে হাজির হয়েছেন বেসেন্ট। তিনি বলেন, বাজারের অস্থিরতার কারণে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে চুক্তি করার ইচ্ছা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেছেন, প্রতিটি সমস্যার সমাধান হবে আলাদা। তাই, এ কাজে বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন। পুরো প্রক্রিয়াতে প্রেসিডেন্ট নিজে যুক্ত থাকতে চান বলেই ৯০ দিনের বিরতি দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য কিছু সময় পর দেওয়া ট্রাম্পের বক্তব্যে কিছুটা ভিন্নতা স্পষ্ট হয়। তিনি বলেছেন, শেয়ার বাজারের সর্বশেষ অবস্থা যাচাই করতে গিয়ে দেখি, মানুষ অনেকটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন অবস্থা ছিল বেশ হতাশাজনক। কিন্তু এখন সবাই বলছে, এটি নাকি আর্থিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দিন। এটা বেশ বড় পরিবর্তন।
কোনও পরামর্শ ছাড়াই কেবল অন্তরের কথা শুনে সিদ্ধান্ত বদল করাকে বেশ ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন ট্রাম্প। তার ধারণা, গণমানুষের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তার সদিচ্ছার কোনও অভাব নেই। এ ধরনের একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায় তার মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, আমি যা করেছি, অন্য কোনও প্রেসিডেন্ট তা করতেন না।
এসএম/টিএ