ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে ক্ষতির মুখে ভারত নিজেই, অর্থনীতিতে ধস

ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দেশজুড়ে। দেশটির ব্যবসায়িক পরিবেশ বর্তমানে চরম ধসের মুখে। এরই মধ্যে বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা বাতিলের মত আরেকটি সিদ্ধান্ত কতটা ফলপ্রসূ হবে ভারতের জন্য তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ছে।

সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যে বড় ধাক্কা তৈরি করতে পারে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ২০২০ সালের জুন মাসে ভারত বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রদান করে। এর ফলে বাংলাদেশের পণ্য ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করতে পারত।

তবে এই সুবিধা বাতিলের ফলে প্রথমিকভাবে বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী চাপে পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে ভারতই বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাবে।

বিজিএমইএ’র সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহেল রাকিব বলেন, "আমাদের বিমানবন্দরের সক্ষমতা সীমিত। তাই বিকল্প ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। তবে আমার মনে হয়, ভারতেরই বেশি ক্ষতি হবে।"

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গণমাধ্যমকে জানান, "প্রাথমিকভাবে কিছুটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের অতিরিক্ত কার্গো আগে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করত। এখন শ্রীলঙ্কা কিংবা মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হতে পারে।"

অর্থনীতিবিদদের মতে, ভারতের রুপি বর্তমানে রেকর্ড দরপতনের মধ্যে রয়েছে, সেইসঙ্গে শেয়ারবাজারেও স্থিতিশীলতা ফেরানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিকে আরও সঙ্কটে ফেলছে।

বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবসা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার চিত্র আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ভারতের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত ভারতের অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ভারতকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরও বিচক্ষণ হতে হবে।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো হবে: উপ-প্রেস সচিব Jul 12, 2025
img
টলিউডে পুজার নতুন শুরু, সঙ্গী দুলকার Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডে হত্যার ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 12, 2025
img
ধাড়াক ২ ট্রেলারে নজর কাড়লেন সিদ্ধান্ত ও তৃপ্তি Jul 12, 2025
img
'জবাবদিহিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি', সায়মা ওয়াজেদকে বাধ্যতামূলক ছুটি নিয়ে প্রেস সচিব Jul 12, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার আভাস Jul 12, 2025
img
‘বাহুবলী ৩’ কি আসবে? দশ বছর পরেও প্রশ্ন অনড় Jul 12, 2025
img
‘সরকার বরাবরের মতোই নীরব’, মিটফোর্ডের ঘটনায় বাঁধন Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডের ঘটনায় আরও একজনসহ মোট গ্রেফতার ৫ Jul 12, 2025
img
কেবল পর্দার সামনে নয়, ক্যামেরার পেছনেও আসছেন এই অভিনেতারা Jul 12, 2025
তোমরা তো ১৩ মাসের নেতা; মুখ খুললেন সাংবাদিক নেতারা! Jul 12, 2025
img
'তারেক রহমানকে নিয়ে রাজপথে যে অশ্লীল অশ্রাব্য স্লোগান দেয়া হচ্ছে তার পরিণতি ভালো হবে না' Jul 12, 2025
img
নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতায় আসমান জমিন ফারাক: রিফাত রশিদ Jul 12, 2025
img
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিলেও ফিনিশিংয়ে ভরসা পাচ্ছেন না কোচ Jul 12, 2025
img
কুবি শিক্ষার্থীদের ৩টি বাস উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ Jul 12, 2025
img
ফেনীর বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম Jul 12, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের ‘শান্তির তত্ত্ব’ ভেস্তে গেছে: ইরান Jul 12, 2025
img
আবারও একসঙ্গে রাজ–মন্দিরা, আসছে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ Jul 12, 2025
img
জোতাকে সম্মান জানিয়ে চিরতরে অবসরে লিভারপুলের ২০ নম্বর জার্সি Jul 12, 2025
img
পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে: আসিফ নজরুল Jul 12, 2025