গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইহুদিদের ধর্মীয় ন্যায়শাস্ত্র তালমুদ-এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। এই ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়েছে, কোনো ইহুদি রাষ্ট্র আট দশকের বেশি টিকবে না এবং ভেঙে যাবে। এটি বাইরের কোনো শক্তির কারণে নয়, বরং নিজেদের মধ্যে জাতিগত ও উপজাতিগত কোন্দলের কারণে হবে।
তালমুদ-এ এই ভবিষ্যদ্বাণীটি ‘লা’নাতুল আকদিস সামিন’ বা ‘অষ্টম দশকের অভিশাপ’ নামে পরিচিত। ইতিহাসে দেখা গেছে, গত দুই হাজার বছরে প্রতিষ্ঠিত বেশিরভাগ ইহুদি রাজ্য ৮০ বছরের বেশি টেকেনি। কিং ডেভিড ও হাসমোনিয়ান রাজত্ব দুটি ৮০ বছরের বেশি স্থায়ী হলেও, তাদেরও ভাঙন ধরেছিল ৮০ বছরের মাথায়।
বর্তমানে আধুনিক ইসরায়েলের বয়স ৭৬ বছর। ২০২৮ সালে ৮০ বছর পূর্ণ হবে। তালমুদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, আগামী ২-৪ বছরের মধ্যে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি ভেঙে যেতে পারে। এই আশঙ্কা ইসরায়েলের অনেক নাগরিক ও নেতার মধ্যে বিরাজ করছে।
ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক গত বছর এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘ইহুদিদের গোটা ইতিহাসে দুটি ছাড়া ৮০ বছরের বেশি স্থায়ীত্বকালের কোনো রাষ্ট্র ইহুদিদের ছিল না।’ এছাড়া, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটও নির্বাচনী প্রচারণায় এই ভবিষ্যদ্বাণীকে অস্বীকার করে বলেছেন, একমাত্র তাদের নেতৃত্বেই ইসরায়েল এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা ও আক্রমণাত্মক মনোভাব এই অভিশাপের ভয় থেকেই উদ্ভূত। তারা মনে করছেন, ইসরায়েল নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছে, কিন্তু তালমুদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভাজনের কারণে তাদের পতন অনিবার্য।
এমআর/এসএন