উন্নত চিকিৎসার জন্য অভ্যুত্থানে আহত ৩১ জনকে পাকিস্তানে পাঠানো হবে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ৪৩ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন আরও ৫২ জনকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তাঁদের মধ্যে ৩১ জনকে পাঠানো হবে পাকিস্তানে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর যখন হাসপাতালগুলোতে পরিদর্শন করতে গেলাম তখন দেখলাম কারো চোখ নেই, পা নেই, হাত নেই। আমরা প্রথমে তাদের একটি ডাটাবেইস তৈরি করার উদ্যোগ নিলাম। কতজন শহীদ হয়েছেন, কতজন আহত হয়েছেন এটার ডেটাবেইস তৈরি করা চ্যালেঞ্জিং ছিল।

অনেকে হাসপাতালে ভর্তির সময় ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন, অনেকে মোবাইল নম্বরের জায়গায় অন্যের নম্বর ব্যবহার করেছেন। এ পর্যন্ত আমরা ডাটাবেইসে যা পেয়েছি সেখানে শহীদ হয়েছেন ৮৬৪ জন। আহত ১৪ হাজারের বেশি। কিছু এখনো ভেরিফায়ের পর্যায়ে আছে। যেগুলো ভেরিফাই না হলে দিতে পারছি না।

আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা এ আন্দোলনে এমনও আহত দেখেছি, যাদের নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও দ্বিধান্বিত ছিল তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে। পরে এ বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলাপ করি। প্রধান উপদেষ্টা বললেন যদি প্রয়োজন হয় তাদের বিদেশে পাঠাতে এবং মেডিক্যাল বোর্ড করতে। পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকটি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দিয়েছিলাম।

যাদেরকে এই কমিটি বলবে তাদের চিকিৎসা এখানের চেয়ে বাইরে ভালো হবে আমরা তাদের বাইরে পাঠাব।’ এসংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো নীতিমালা ছিল না। যে কারণে সমস্যা দেখা দিল। পরবর্তী সময়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম মানুষকে তো আমাদের বাঁচাতে হবে। পরে নীতিমালা ছাড়াই প্রধান উপদেষ্টার সাথে কথা বলে তাদের বিদেশে পাঠাই। অনেকে এমনও আহত ছিল তাদের সাধারণভাবে পাঠালে হবে না, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পাঠাতে হবে। আমরা মোট চারজনকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে পাঠিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ৪০ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছি। তার মধ্যে ২৬ জন গেছেন ব্যাঙ্ককে। ১৩ জন গেছেন সিঙ্গাপুরে। একজন গেছেন রাশিয়ায়। ইতোমধ্যে ২৬ জনের মতো দেশে ফিরেছেন। বাকিরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে আরো আটজনের একটি তালিকা করা হয়েছে। এটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদেরও বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে। আমরা ২১ জনকে টার্কিতে পাঠানোর চেষ্টা করছি। ৩১ জন যাবে পাকিস্তানে।

আহতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে চোখ হারিয়েছেন ৭০০ জন। তার মধ্যে দু-চোখ হারিয়েছেন ২১ জন। এক চোখ হারিয়েছেন সাড়ে চার শর মতো। এসব রোগীর যে মানসিক ট্রমা সেটা চিকিৎসার জন্য যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকার দরকার সেটা আমাদের এখানে নেই। তবে, তাদের এই মানসিক ট্রমা কমানোর জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এ দায়িত্ব শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের না। এ দায়িত্ব আমাদের সবার।
টিএ/


Share this news on: