চিনের কোর্টেই বল: শুল্ক সংঘাতে সমঝোতার দায় দিল ট্রাম্প প্রশাসন

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিচ্ছে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির মুখোমুখি হচ্ছে বেজিং। শুল্কনীতি ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনার মধ্যে এবার ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা গেল দ্ব্যর্থহীন বার্তা—‘আমেরিকা নয়, চিনকেই এখন সমঝোতায় আসতে হবে।’

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে বলেছেন, এখন যা করার তা চিনেরই করার কথা। বল এখন চিনের কোর্টে।”

তিনি আরও বলেন, “চিন আকারে বড় দেশ হলেও বাণিজ্যিকভাবে তারা বিশেষ কোনো সুবিধা পাবে না। অন্যান্য দেশের মতোই তাদের ওপরও শুল্ক আরোপে কঠোর হবে আমেরিকা।”

চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন চিনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করে। পরে আরও ৩৪ শতাংশ যুক্ত হয়। চিন পাল্টা জবাব দেয়, কিন্তু ট্রাম্প হুমকি দেন অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের। সব মিলিয়ে আমেরিকার শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, সেই শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়া হয়।

চিনও চুপ থাকেনি। পাল্টা জবাবে ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসায় মার্কিন পণ্যের ওপর। সেই সঙ্গে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একযোগে হুঁশিয়ারি আসে—“চিন পিছু হটবে না।”

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “আমরা আমাদের নাগরিকদের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে দেব না। আমাদের শান্তি সহ্য করা যেন দুর্বলতা না ভাবা হয়।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্যে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। এতে চিনের সঙ্গে সংঘাত এড়ানো নয়, বরং কৌশলে আরও চাপ সৃষ্টি করাই লক্ষ্য। এক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে—চিনের বাজার আমেরিকার অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল, ফলে চাপ প্রয়োগে বেজিং কিছুটা হলেও নতি স্বীকারে বাধ্য হবে।

এফপি

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সর্বক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে ইরানের আগ্রহ প্রকাশ Jul 02, 2025
img
জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার চক্রান্ত রুখে দেয়া হবে : মুরাদ Jul 02, 2025
img
১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক ছাড়লেন বৈষম্যবিরোধীরা Jul 02, 2025
img
হঠাৎ জাপানের ওপর চটলেন ট্রাম্প, দিলেন কঠিন বার্তা Jul 02, 2025
img
এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে একযোগে অবসরে পাঠাল সরকার Jul 02, 2025
img
ব্যাগেজ নীতিতে মোবাইল ও স্বর্ণে বড় ছাড় Jul 02, 2025
img
বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান ছাড়া নির্বাচন হলে অংশগ্রহণ করব না : নাহিদ ইসলাম Jul 02, 2025
img
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত হলো ভূমিকম্প শনাক্তকরণ যন্ত্র Jul 02, 2025
img
‘কালা জাহাঙ্গীর’ রূপে দেখা যেতে পারে শাকিব খানকে Jul 02, 2025
img
বিরোধীরাও জানে বিএনপি ক্ষমতায় যাচ্ছে : জাহেদ উর রহমান Jul 02, 2025
img
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে হঠাৎ মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ল সাপ Jul 02, 2025
img
ফ্যাসিস্টের পতন হলেও ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা এখনো রয়ে গেছে : নাহিদ ইসলাম Jul 02, 2025
জীবনের সবচেয়ে দামী সম্পদ কী Jul 02, 2025
নির্বাক অভিনয় করেও অবিশ্বাস্য পারিশ্রমিক ‘মুন্নি’র! Jul 02, 2025
পিচ কিউরেটর গামিনির সময় কি শেষের পথে? শিক্ষিত কিউরেটর আনার ব্যবস্থা করছি: মাহবুব Jul 02, 2025
বিপিএলে আসছে পরিবর্তন, সব পরিকল্পনা Jul 02, 2025
কোনো রাজনৈতিক দল সংস্কার শেষ করতে পারবে কিনা জানেন না আসিফ নজরুল Jul 02, 2025
যেভাবে লাইসেন্স পেয়েছিলেন উপদেষ্টা আসিফ Jul 02, 2025
আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড! Jul 02, 2025
রংপুর-৪ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আখতার হোসেন Jul 02, 2025