পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন চুলিক ও পূর্ব ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপ।বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টা ৩৭ মিনিটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন তারা।
প্রটোকল অনুযায়ী, মার্কিন প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করবেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকগুলোতে ঢাকার পক্ষে বাংলাদেশি পণ্যে মার্কিন শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গ, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার অগ্রগতি, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক উত্তরণে মার্কিন সহায়তা চাওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের অ্যাজেন্ডায় থাকছে মিয়ানমারের সার্বিক পরিস্থিতিসহ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিবেচনায় উভয়পক্ষ দেশটি নিয়ে যার যার অবস্থান জানতে চাইতে পারে। এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসী ফেরতসহ ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্কের ধরন এবং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রাখতে পারেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দৃশ্যমান। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফর করেছেন। এরইমধ্যে ওয়াশিংটন এ সফর সম্পর্কে ঢাকার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়েছে। ঢাকার পক্ষ থেকে তার জবাবও দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
দায়িত্বশীল এক কূটনীতিক বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরের মূল ইস্যু রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন কমাবে। আমরা শুনতে পাচ্ছি, মার্কিন প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে এসে এই বার্তা দেবে। কিন্তু অর্থায়ন কতটা কমবে বা ট্রাম্প প্রশাসনের রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সেটি সম্পর্কে হয়ত এই সফরে ধারণা পাওয়া যাবে। এ বছর না হলেও আগামী বছরের শুরুতে মিয়ানমারে নির্বাচন হওয়ার কথা। মিয়ানমারের নির্বাচন নিয়েও তারা কথা বলবেন। মিয়ানমারের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পাশে চাইবেন।
গত মঙ্গলবার ঢাকায় আসেন মার্কিন দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন চুলিক। পরদিন বুধবার আসেন দেশটির পূর্ব ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপ। একইদিন আসেন মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসন।ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর।
এমআর/এসএন