মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর এলাকায় কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে যায় বরিশাল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ। তবু বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি ১০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক।
পরপর দুই দফা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয় বাসে থাকা অন্তত ২০ যাত্রী। তবুও চালক বাস না থামিয়ে আহত যাত্রীদের নিয়ে ছাদবিহীন বাসটি চালিয়ে নিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়ক পর্যন্ত। আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুর্ঘটনার ১ ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টায় আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহত বাস যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের যাত্রীবাহী বাসটি চালক বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌঁছলে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌঁছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।
যাত্রীরা বলেন, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন চলন্ত বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরে পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার ছিদ্দিকীয়া মাদরাসার সামনে চলে আসে। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এমআর/টিএ