সংসদ সদস্যদের মূল কাজ আইন প্রণয়ন হওয়া উচিত, স্থানীয় উন্নয়ন কাজে জড়ানো নয় : সারোয়ার তুষার

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এক টক শোতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রস্তাব করেন যে, সংসদ সদস্যদের মূল কাজ আইন প্রণয়ন হওয়া উচিত, স্থানীয় উন্নয়ন কাজে জড়ানো নয়। এটি করলে দুর্নীতি কমবে এবং যোগ্য ব্যক্তিরা রাজনীতিতে আসবেন।

তুষার বলেছেন, ১৯৭২-এর সংবিধানে ক্ষমতা এক ব্যক্তির (বঙ্গবন্ধু) হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল। গণপরিষদে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার না থাকায় স্বাধীন মতপ্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে সংশোধনীগুলোও ক্ষমতার কাঠামোকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারেনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা একটি সমাধান হিসেবে আসলেও এটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নয়। প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বিচারপতিদের ব্যবহার বিচার বিভাগকে রাজনীতিকরণ করেছে। তুষার প্রস্তাব করেন, নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হোক, যার একমাত্র দায়িত্ব হবে নির্বাচন পরিচালনা।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাষ্ট্র, সরকার ও দলকে আলাদা করতে হবে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল, সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোনো স্পষ্ট বিভাজন নেই। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো (নির্বাচন কমিশন, দুদক, মানবাধিকার কমিশন) সরকারের আজ্ঞাবহ হওয়ার বদলে রাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করা উচিত।

একটি ৯ সদস্যের জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিযুক্তি নিশ্চিত করবে। এতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও সংসদ সদস্যরা থাকবেন, যাতে সরকারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ না থাকে।

তিনি সমালোচনা করেন যে, রাজনীতিবিদদের শুদ্ধ করার জন্য "বাইরের কাউকে" রেফারি হিসেবে আনা লজ্জাজনক। এর বদলে প্রাতিষ্ঠানিক চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স জোরদার করতে হবে, যাতে একটি অঙ্গ অন্য অঙ্গের ক্ষমতা দখল করতে না পারে।

তিনি স্বীকার করেন যে সংবিধান কখনই পরিপূর্ণ নয়—প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এর সংস্কার প্রয়োজন। যেমন, প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কী হবে, তা স্পষ্ট না থাকায় হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে হয়েছে।

এসএম/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিজয়ের ফিরিয়ে দেওয়া চরিত্রে ধানুশের বাজিমাত Jul 05, 2025
img
তুর্কমেনিস্তানকে ৭ গোলে পরাজিত করল বাংলাদেশ Jul 05, 2025
img
অভিনেতা বাপ্পীর সঙ্গে ছবি প্রকাশ, কী ইঙ্গিত দিলেন মিষ্টি জান্নাত? Jul 05, 2025
img
অনার্স পরীক্ষায় নকল করলে চার বছর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা Jul 05, 2025
img
পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার নয়, খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি: নাহিদ ইসলাম Jul 05, 2025
img
ভোলায় কোস্টগার্ডের অভিযানে ৭ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ Jul 05, 2025
img
১৩ গোলের উৎসবে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাপুটে জয় Jul 05, 2025
img
আওয়ামী নেতাকর্মীরা স্থানীয় সরকারকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিল : প্রিন্স Jul 05, 2025
img
বার্তা ভুল বোঝায় ফ্লাইটে আতঙ্ক, জরুরি অবতরণ Jul 05, 2025
img
বিএনপি আন্দোলনে নামলে নির্বাচন পেছানোর সাহস কারোর নেই: গয়েশ্বর Jul 05, 2025
img
ওটিটিতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘জ্বীন ৩’ Jul 05, 2025
img
নিজের আয়ু নিয়ে নতুন ভবিষ্যদ্বাণী করলেন দালাই লামা Jul 05, 2025
img
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে দফায় দফায় ড্রোন হামলা চালাল ইসরাইল Jul 05, 2025
img
২০ মিনিটে তুর্কমেনিস্তানের জালে ৬ গোল, ৭ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করল বাংলাদেশ Jul 05, 2025
img
ফ্যাসিজম তৈরির পথ বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিকে বেছে নিতে হবে: জামায়াত আমির Jul 05, 2025
img
সংসার না করলেও সন্তানের মা হতে চান জয়া Jul 05, 2025
img
লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিনেত্রী কাইলি পেজের নিথর দেহ উদ্ধার Jul 05, 2025
img
আ. লীগের মতো আচরণ করলে আমরাও ছিটকে পড়ব : বিএনপি নেতা মাকসুদুল Jul 05, 2025
img
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিচ্ছেন ম্যাক্রোঁ Jul 05, 2025
img
পাঠ্যবইয়ের ভুল চিহ্নিত করতে শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা বোর্ডের আহ্বান Jul 05, 2025