নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল ও ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে আগামী শনিবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকায় সমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা পরে দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তা কল্পনাও করা যায় না। পতিত ফ্যাসিবাদও যে সাহস করে নাই তারা সেই দুঃসাহস দেখিয়ে শতভাগ ধার্মিকের দেশের পারিবারিক আইন থেকে ধর্মকে বাতিল করার প্রস্তাব করেছে। তাদের এই ঔদ্ধত্য কোনোভাবে সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, এই কমিশন নারীদের কল্যাণের জন্য প্রস্তাব তৈরি করার জন্য গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তারা নারীদের জন্য অসন্মান ও অভিশপ্ত জীবনের প্রস্তাব করেছে। কোনো নারীই স্বেচ্ছায় কেবলই টাকার জন্য যৌনকর্ম করে না। বরং পাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়ে বাধ্যতামূলকভাবে তাদেরকে এই ক্ষেত্রে আটকে থাকতে হয়। নারীর জন্য যেকোনো কল্যাণকর প্রস্তাবে তাদেরকে এই অভিশপ্ত জীবন থেকে বের করে আনার প্রচেষ্টা থাকার কথা অথচ এই কমিশন তাদের এই বাধ্যতামূলক কাজকে ‘পেশা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবের মাধ্যমে নারীর জন্য যা অভিশাপ তাকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই কমিশন তাদের প্রতিবেদনে যে ধরনের ভাষা ও যুক্তি ব্যবহার করেছে তা বাংলাদেশের নারীদের ভাষা ও যুক্তি না। এগুলো পশ্চিমা বিকৃত ভাষা ও যুক্তি। বাংলাদেশের নারীর উন্নয়ন ও মুক্তিকল্পে গঠিন একটা কমিশনের সকল সদস্য কেনো পশ্চিমা চিন্তা ও নির্দিষ্ট ঘরনার হলো তা আমাদের বোধগম্য না। এই সরকার সংস্কারের ক্ষেত্রে জনমানুষের সমর্থনপুষ্ট। কিন্তু এই নারী কমিশনের প্রস্তাব জনরোষ উস্কে দেবে এবং সরকারকে জনসমর্থনহীন করে দেবে।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, এই সংস্কার প্রস্তাব জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে বিপদগ্রস্ত করার অশুভ চক্রান্তে লিপ্ত কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এবং অবিলম্বে এই কমিশনের প্রস্তাবকে সরকারিভাবে প্রত্যাখ্যান করে কমিশনকে বাতিল করতে হবে।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, নারী কমিশন ইসলামবিরুদ্ধ প্রস্তাব দিলেই প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একে সাধুবাদ জানানো হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে অঙ্গিকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এটা জাতিতে হতাশ করেছে। তারই প্রেক্ষিতে আগামী শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারী কমিশনের প্রস্তাব বাতিল ও ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে বাইতুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে গণসমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। দল-মত ও ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে সেই মিছিলে অংশগ্রহণের আহবান জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, কেএম আতিকুর রহমান, লোকমান হোসেন জাফরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, এডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, শাহ ইফতেখার তারিক, ও মাওলানা খলিলুর রহমান প্রমুখ।
আরআর/টিএ