মধ্য ভূমধ্যসাগরে তিনটি নৌকা থেকে ২০০’র বেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে দুটি মানবিক সংস্থা। এছাড়া, লিবিয়ার উপকূল থেকে যাত্রা করা আরও ৭২ জনের নিখোঁজ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। জার্মান এনজিও সি-আই এবং সি-ওয়াচ জানায়, তারা গত শনি ও রবিবার তিনটি আলাদা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে এসব অভিবাসীদের রক্ষা করেছে।
সি-ওয়াচ পরিচালিত আস্ট্রাল নামের একটি ছোট নৌকা শনিবার দুটি নৌকায় থাকা প্রায় ১৪০ জন অভিবাসীকে খুঁজে পেয়েছে।
কিন্তু সে নৌকায় ধারণক্ষমতা না থাকায় অভিবাসীদের উদ্ধার না করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি অস্ট্রালের কর্মকর্তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানায়।
পরের দিন রাতে সি-আই-৫ উদ্ধার জাহাজ দ্বিতল কাঠের একটি নৌকা থেকে ৭৬ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সাগরে ঢেউ ও অন্ধকারের কারণে উদ্ধার অভিযানটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
উদ্ধার হওয়া অনেকেই পানিশূন্যতা, হাইপোথার্মিয়া, বমি ও চরম ক্লান্তিতে ভূগছিল। কয়েকজনকে সি-আই-৫-এর মেডিক্যাল ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। পরে তাদের অবস্থার উন্নতি হয় বলে জানিয়েছে এনজিওটি।
ইতালি কর্তৃপক্ষ জাহজটিকে দক্ষিণ ইতালির রেজ্জো দ্য কালাব্রিয়া বন্দরে অবতরণের নির্দেশ দিলেও আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি লাম্পেদুসা দ্বীপে অভিবাসীদের নামাতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে সোমবার ইতালির রাভেন্না বন্দরে পৌঁছয় লাইফ সাপোর্ট নামের আরেকটি উদ্ধার জাহাজ। যেটি লিবিয়ার উপকূল থেকে পাঁচ দিন আগে ৮২ জনকে উদ্ধার করেছিল, যাদের মধ্যে ১১ জন নারী।
নৌকাটি দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা সাগরে ভেসে ছিল এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নৌকার রাবার টিউবগুলো অর্ধেক ডুবে গিয়েছিল।
এ ছাড় ১২ এপ্রিল লিবিয়ার সাবরাথা এলাকা থেকে রওনা হওয়া ৭২ জন অভিবাসী এখনো নিখোঁজ রয়েছে। ইতালীয় সাংবাদিক সার্জিও স্কানডুরা জানিয়েছেন, এই যাত্রাপথে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল।
ফলে অনেকেই নৌকাটি সাগরে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত মধ্য ভূমধ্যসাগরে তিন শতাধিক অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই রুটে প্রাণ হারিয়েছে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছিল শিশু, যা গড়ে প্রতিদিন একটি শিশুর মৃত্যুর ইঙ্গিত দেয়।
এনজিওগুলো বারবার সতর্ক করছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরের এই রুটটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অভিবাসনপথ। শুধু কিছু মানবিক জাহাজ এই বিশাল সাগরের খুব অল্প অংশেই টহল দেয়।
আরএ/টিএ