ওপেন এআই গুগলের জনপ্রিয় ব্রাউজার ‘ক্রোম’ কিনে নিতে চায়। তাদের মতে, সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে গুগলের একচেটিয়া দখল ভাঙার পথে এটি হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনে চলমান গুগলের অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার শুনানিতে ওপেনএআই-এর প্রধান পণ্য কর্মকর্তা নিক টার্লি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যদি গুগলকে তাদের ক্রোম ব্রাউজার বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে ওপেনএআই সেটি কিনে নিতে প্রস্তুত।
টার্লির মতে, গুগলের অনুসন্ধান ও বিজ্ঞাপন বাজারে আধিপত্য শুধু এআই উন্নয়নের ক্ষেত্রেই নয়, পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতার বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওপেনএআই মনে করে, ক্রোমের মতো একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম কিনে নিয়ে তারা ব্যবহারকারীদের জন্য এআই-ভিত্তিক নতুন ধরনের সার্চ অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারবে।
বর্তমানে ওপেনএআই নিজেদের চ্যাটজিপিটি মডেলকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার চেষ্টা করলেও, অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তাদের এখনো গুগলের মতো সক্ষমতা অর্জন হয়নি। টার্লি জানিয়েছেন, এখনো চ্যাটজিপিটি প্রায় ৮০ শতাংশ সার্চ প্রশ্নের জবাব নিজস্ব প্রযুক্তিতে দিতে অক্ষম।
গুগলের বিরুদ্ধে মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ এনেছে—তারা বিভিন্ন মোবাইল নির্মাতার সঙ্গে এমন চুক্তি করেছে। যার ফলে গুগলের সার্চ, ক্রোম ও জেমিনি এআই অ্যাপ নতুন ফোনে ডিফল্ট হিসেবে থাকে। এই চর্চা প্রতিযোগিতাবিরোধী বলে দাবি সরকারি আইনজীবীদের।
বিচারক অমিত মেহতা রায় দিয়েছেন, গুগলের এসব চুক্তি প্রযুক্তি বাজারে অন্যদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তা দীর্ঘমেয়াদে গুগলের এআই পণ্যগুলোকেও বাড়তি সুবিধা দেবে।
টার্লি জানান, গত বছর জুলাইয়ে ওপেনএআই গুগলের সার্চ এপিআই ব্যবহার করতে চেয়েছিল। তারা যুক্তি দিয়েছিল, বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য নিয়ে চ্যাটজিপিটিকে আরও কার্যকর করে তোলা সম্ভব। তবে আগস্টে গুগল সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
বর্তমানে চ্যাটজিপিটি মাইক্রোসফটের বিং সার্চ ইঞ্জিনের ওপর নির্ভরশীল। তবে ওপেনএআই মনে করছে, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের ডেটা ও প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার না পাওয়া পর্যন্ত অনুসন্ধান ও এআই খাতে সমান প্রতিযোগিতা তৈরি হবে না।
টার্লির ভাষায়, ‘আমরা চাই একটি উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক সার্চ ইকোসিস্টেম। আর সেটি গড়তে হলে গুগলের প্রভাব কাটাতে হবে।’
আরএ/টিএ